উপকূলীয় অঞ্চল বাগেরহাটে তীব্র হিটওয়েভের ফলে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। কৃষাণ সংকটে বন্ধ রয়েছে এ মৌসুমের ফসল কর্তন। ছোট বড় হাজার হাজার মৎস্য খামারের পানি উত্তপ্ত হয়ে মাছ মরার শংকা করছে খামারিরা। পশুপাখি ছুটছে বিভিন্ন পুকুর ও জলাশয়ে। রাস্তার পিচ গলে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। ছোট ছোট বাহনে নেই যাত্রী। দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে প্রায় পর্যটক শূন্য।
আবহাওয়া অফিস পুরো জেলা জুড়ে জারি করেছে তিন দিনের “হিট এলার্ট”। ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা। খবর পাওয়া গেছে বৃষ্টির জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় ইসতিকারের নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিরব দর্শক হয়ে বসে থাকা বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সূর্য উঠতেই কিছু সময় ঠান্ডা থাকে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ কিন্তু সময় বাড়ার সাথে সাথে শুরু হয় সূর্যের তাপ বাড়ানোর খেলা। সূর্যের তাপে আস্তে আস্তে সারা শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু করে। বারবার গলা শুকিয়ে আসে। সে কারণে শরীর দুর্বল হয়ে যায় রোদ্রের তাপে আর কাজ করতে পারি না। অপরদিকে কাজ না করলে হাড়ি শিকেই ওঠে। জীবনটা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
কয়েকজন মৎস্য খামারির সাথে আলাপকালে তারা জানান, এই মৌসুমে প্রায় প্রতিটি মৎস্য খামারে পানি কম রয়েছে। রৌদ্রের তাপে পানি অতিরিক্ত গরম হয়ে যাচ্ছে। খামারে থাকা ছোট বড় মাছ মরে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। এমনটা হলে অপরনীয় ক্ষতি হবে মৎস্য চাষীদের। বর্তমানে জেলার প্রত্যেকটা জমিতে পাকা ইরি ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে ফসল পেকে গিয়েছে। কৃষানের অভাবে ধান কাট
বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশুরোগির সংখ্যা অনেক বেশি। হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে তাদের। দর্শনীয় ও বিনোদন স্থানগুলো প্রায় ফাঁকা বললেই চলে। ষাট গম্বুজ মসজিদ ও খান জাহান আলী মাজারে দর্শনার্থীর সংখ্যা খুবই কম। বিনোদন স্থান সুন্দরবন রিসোর্ট এর ম্যানেজারের সাথে কথা বলে জানা গেছে আজ এ পর্যন্ত ২০-২৫টি টিকিট বিক্রি হয়েছে।
ষাটগম্বুজ বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ আসলাম আলী বলেন, জীবনে এত গরম কোনদিন দেখিনি। নিকট অতীতেও এরকম গরমের কথা শুনিনি। সরকার ইতিমধ্যে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুল কলেজ মাদরাসার পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে। আমরা শিক্ষকগণ মাদ্রাসায় আছি। শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর এবং এই গরমে করণীয় সম্বন্ধে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিতেছি।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক
মোঃ মাসুদ রানা জানান, আগামী ২/১ দিনের মধ্যে বৃষ্টির তেমন কোন সম্ভবনা নেই। গত কয়েক দিন ধরে বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তা-ঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। লোকজন প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকায় তীব্র গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বাতাসের সাথে আদ্রতা বহন করছে না সবকিছু শুষ্ক হয়ে যাওয়ায় গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
Please follow and like us: