
নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে মোঃ সোহাগ নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় সোহাগের চাচা আবদুল খালেক বাদি হয়ে মীর হোসেনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এছাড়াও কুমিল্লা সদর দক্ষিণের দরবেশপাড়ায় মহিন উদ্দীন নামের এক যুবককে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে র্দূবৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ওই এলাকার এক ফসলী জমি থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে।
একইদিনে কুমিল্লার তিতাসে উদ্ধার হয়েছে অজ্ঞাত যুবকের লাশ। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় উপজেলার গৌরীপুর-হোমনা সড়কের দড়িকান্দি ব্রিজের নিচে তিতাস নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারনা ২/৩দিন আগে তাকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলা হয়েছে।
অপরদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় চলন্ত মাইক্রোবাস থেকে যুবকের (৩৬) মরদেহ ফেলে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে হাইওয়ে পুলিশ অজ্ঞাত নামা ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পাগল পরিচয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠায়।
চৌদ্দগ্রাম:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে মোঃ সোহাগ নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত সোহাগ উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আবদুল করিমের পুত্র।
জানা গেছে, সোহাগের(৩৫) ব্যবহৃত একটি মেমোরি কার্ড নিয়ে যায় পাশ্ববর্তী বাড়ির মৃত মোক্তার হোসেনের পুত্র মীর হোসেন(২৫)। কার্ডটি ফেরত চাওয়ায় কয়েকদিন আগে দুইজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে গত শনিবার(১৫ অক্টোবর) বিকেলে দিনমজুরী শেষে বাড়ি ফেরার পথে সোহাগের মাথার পিছনে লাঠি দিয়ে স্বজোরে আঘাত করে মীর হোসেন। স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে মীর হোসেন লাঠি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তারা আহত সোহাগকে উদ্ধার শেষে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে সোহাগের মৃত্যু হয়। এঘটনায় সোহাগের চাচা আবদুল খালেক বাদি হয়ে মীর হোসেনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহত সোহাগের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মাদকের মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আবুল ফয়সল জানান, ‘হত্যার ঘটনা শোনার সাথেই মামলা নেয়া হয়েছে। আসামীকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে’।
সদর দক্ষিণ: কুমিল্লা সদর দক্ষিণের দরবেশপাড়ায় মহিন উদ্দীন নামের এক যুবককে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে র্দূবৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ওই এলাকার এক ফসলী জমি থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের দরবেশপাড়া গ্রামের পুরীর বাড়ীর পূর্ব পাশে ফসলী জমিতে একটি লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে সদর দক্ষিণ মডেল থানার পরিদর্শক তদন্ত সজল কুমার কানুর নেতৃত্বে এস.আই খাদেমুল বাহার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় যুবকের (২৫) লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এঘটনায় অজ্ঞাত নামাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু করে পুলিশ।
সংবাদ পেয়ে দুপুর ২টা একই ইউনিয়নের কনকশ্রী উত্তর পাড়ার মরহুম আবুল কাশেমের ছেলে নূর হোসেন হাসান মর্গে গিয়ে লাশটিকে নিজের ভাগিনা মহিন উদ্দীন বলে সনাক্ত করে এবং লাশ গ্রহন করে বাড়ী নিয়ে যায়।
মহিনের মামা হাসান বলেন, সে বুধবার রাতে সিলেট থেকে আমাদের বাড়ীতে আসতেছিল। রাত ১১টায় গাড়ীতে থাকাবস্থায় তার মায়ের সাথে কথা বলেছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিনের এক বন্ধু বলেন, মহিনের বাবা মরহুম ইদর আলী অনুমান দেড় বছর আগে মারা গেছে। মৃত্যুর আগে একটি পক্ষ তাকেও অপহরন করেছিল। অপহরনের সাথে মহিন হত্যাকান্ডের সম্পর্ক থাকতে পারে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই খাদেমুল বাহার বলেন, নিহতের পিঠে প্রায় ৩০টি ছুরিকাঘাতের চিহৃ রয়েছে। রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কার্যক্রম চলছে।
তিতাস:
কুমিল্লার তিতাসে এক অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে তিতাস থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় উপজেলার গৌরীপুর-হোমনা সড়কের দড়িকান্দি ব্রিজের নিচে তিতাস নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে আনুমানিক ২/৩দিন তাকে হত্যা করে নদীতে ফেললে ¯্রােতে ভেসে লাশটি এখানে এসেছে। লাশটি উদ্ধারের সময় তার পরনে ছিল কালো প্যান্ট, ফুলহাতা শার্ট, মুখমন্ডল গোলাকার ও ফ্রান্স কাটিং খোঁচা-খোঁচা পাতলা দাড়ি রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এই বিষয়ে তিতাস থানার ওসি মনিরুল ইসলাম পিপিএম বলেন, লাশটি দূরে কোথাও থেকে ভেসে এসেছে এবং এখনো পর্যন্ত সনাক্ত হয়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়ছে এবং সনাক্ত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চান্দিনা:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় চলন্ত মাইক্রোবাস থেকে যুবকের (৩৬) মরদেহ ফেলে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে হাইওয়ে পুলিশ অজ্ঞাত নামা ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পাগল পরিচয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠায়।
বুধবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে চান্দিনা উপজেলাধীন নূরীতলা এলাকায় মহাসড়কের উপর এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানাযায়, বিকাল পৌঁনে ৩টার দিকে কুমিল্লামুখী সাদা রংয়ের একটি প্রাইভেটকার থেকে তার মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। বিকালে হাইওয়ে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।
হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মনিরুল ইসলাম জানান, লোকটি পাগল ছিল। সে দীর্ঘদিন যাবৎ এ এলাকায় ঘুরাঘুরি করছিল। বিকেলে মরদেহ উদ্ধার কালে তার শরীরের উপর অংশ ডিভাইডারের ও নিচের অংশ শরীর মহাসড়কের উপরে দেখতে পাই। তবে কখন-কিভাবে মারা গেছে তা জানি না। তার কোন পরিচয় না পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই।
হাইওয়ে পুলিশের এমন তথ্যে হতবাক এলাকাবাসী! ভদ্রচিত পোশাকের ওই ব্যক্তিকে কখনও এ এলাকায় দেখেনি বলে জানায় তারা।
চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, হাইওয়ে পুলিশ একটি পাগলে মরদেহ পেয়েছে বলে আমাকে অবহিত করেছিল। তার বেশি কিছু আমার জানা নেই।