উজ্জ্বল অধিকারী, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:- শারীরিক প্রতিবন্ধী শামীম তালুকদার গ্রাম্য সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে সে নিঃস্ব হয়ে পরেছে। সে ঋণ নিয়ে অসুস্থ বাবার চিকিৎসা করিয়েছেন।
শামীম তালুকদার শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও তাকে দমাতে পারেনি প্রতিবন্ধীকতা। সে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকার বেড়াখারুয়া গ্রামের মোতালেব তালুকদারের ছেলে।
শামীম প্রতিবন্ধী হয়ে পৌর এলাকার মুকুন্দগাতী বাজারস্থ এসএম সুপার মার্কেটে মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ করে জীবিকা নিবাহ করেন। বাবার অসুস্থতায় চিকিৎসার জন্য গ্রাম্য সমিতি থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা ঋণ নেয়। মোবাইল সার্ভিসিং এর দোকান থেকে সারে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এখনও তার ঋণ ২লাখ ৫০হাজার টাকা। কিন্তু সে টাকায় তাকে সাপ্তাহিক ২০ টাকা লাভ দিতে হয় প্রতি হাজারে। বর্তমানে ঋণ ব্যাতিত প্রতিমাসে তার লাভ দিতে হয় ২৫ হাজার টাকা। লাভ দিতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছে শারীরিক প্রতিবন্ধী শামীম। সে চায় কম লাভে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারলে গ্রাম্য সমিতির টাকা পরিশোধ করে দিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে।
ছোট বেলা থেকে তার জীবনযুদ্ধ শুরু হয়। পরিবারের তিনিই সবচেয়ে বড়।
জীবন সংগ্রামী শামীমের সাথে এ কথা হয়। কথার ফাঁকে ফাঁকে শোনায় তার সংগ্রামী জীবনের গল্প। এরপর আবেগ-আপ্লুুত হয়ে তার কষ্টেগাঁথা ঘটনার বর্ণনা করেন। কীভাবে না খেয়ে, এখন লোন ও হাওলাত করে দরিদ্রতার সঙ্গে সংগ্রাম করে টিকে আছেন তা শুনালেন। নীরবে তার কষ্টের কথা বলে চোখের পানি ফেললেন। তবে জীবনযুদ্ধে পরাজিত হতে চায় না শামীম। তার বিশ্বাস ইচ্ছাশক্তি মানুষকে কখনো প্রতিবন্ধী রাখতে পারে না। তবে এখন চরম প্রতিকূলতার মাঝে দিন কাটাচ্ছে।
জন্মের পর থেকেই কষ্ট ও ত্যাগের মধ্যে দিয়ে এই পর্যন্ত আসতে সক্ষম হয়েছেন শামীম । বাবার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নেন ৬ লক্ষ টাকার মত বেশীর ভাগ টাকা শোধ করেছেন এই মোবাইল সার্ভিসিং করেই। এখন ২ লক্ষ কয়েক হাজার টাকা দেনা হয়ে শামীম অতি কষ্টে জীবন যাপন করছেন। সমিতির বেশী লাভ দিতে গিয়ে। সে নিজে কাজ করেই শোধ করতে চান ঋণের টাকা।
এব্যাপারে শারীরিক প্রতিবন্ধী শামীম তালুকদার বলেন, আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। প্রতিবন্ধী হলেও অক্ষম না, কাজ জানি। আমি চাই সাধারন মানুষের মতোই জীবন যাপন করতে। আমার বাবার চিকিৎসার জন্য গ্রাম্য সমিতি থেকে আড়াই লক্ষ টাকা তুলে প্রতি হাজারে ২০ টাকা লাভ দিতে গিয়ে দিশেহারা হয়েছি। আমার বাবার নামে কিছু জমি আছে তা রেখে কোন ব্যাংক যদি আমাকে মাসিক কিস্তিতে আড়াই লক্ষ টাকা ঋণ দেয় তাহলে আমি কাজ করে টাকা শোধ করতে পারবো।
প্রতিবন্ধী শামীমের বাবা মোতালেব তালুকদার বলেন, আমার ২২ শতাংশ জমি আছে, জমির দলিল দিয়ে যদি কোন ব্যাংক ঋণ দেয় তাহলে আমার ছেলে কাজ করে ভাল ভাবে শোধ করতে পারবে।