মোঃ জিল্লুর রহমান,লাকসাম প্রতিনিধি– কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে চাঁদা দাবির জের ধরে জাহাঙ্গীর আলম (৩০) নামে এক ওয়ার্ড যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার সরসপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাতাবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জাহাঙ্গীর ওই গ্রামের কাজি বাড়ির আহসান উল্লাহর ছেলে। তিনি বাতাবাড়িয়া ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সরসপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাতাবাড়িয়া গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির সালেহ আহম্মদের ছেলে সুদান প্রবাসী মিশু মিয়া ওই গ্রামে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। কয়েকদিন ধরে ওই প্রবাসীর কাছে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর। তবে ঘটনার শুরু থেকেই ওই যুবলীগ নেতার দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান মিশু। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীর তার লোকজন নিয়ে মিশুর কাছে গিয়ে ফের চাঁদার টাকা দাবি করেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীরের ছুরিকাঘাতে মিশু পক্ষের মানিক নামে একজন আহত হন।
ওই ঘটনার পর থেকেই ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল শুক্রবার বিকেলে ওই ঘটনার জের ধরে মিশু তার দলবল নিয়ে জাহাঙ্গীরের ওপর হামলা করে। এ সময় জাহাঙ্গীরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই যুবলীগ নেতার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে ওই এলাকা অনেকটাই পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, জাহাঙ্গীরের ভাই আলমগীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “গত বছর আমার ভাই সরকারি বরাদ্দে এলাকার একটি মাটির রাস্তা নির্মাণ করে। এখন ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি তৈরির সকল মালামাল আনছেন প্রবাসী মিশু। এতে রাস্তার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এজন্য আমার ভাই জাহাঙ্গীর মিশুকে বাঁধা দিয়েছিল। এর জের ধরে মিশুসহ সন্ত্রাসীরা আমার ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে।”
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মিশুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। মনোহরগঞ্জ থানার ওসি বিপুল চন্দ্র ভট্ট বলেন, “এলাকার কেউ বলছে চাঁদাবাজি নিয়ে, আবার কেউ বলছে মাটির রাস্তা নিয়ে বিরোধে তাকে (জাহাঙ্গীর) হত্যা করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।