২০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-
  • হোম
  • দূর্ঘটনা
  • মহেশপুরে ঐতিহ্যবাহী চড়কপূজায় পিঠে বড়শি গেঁথে ২৫ ফুট উপরে শুন্যে ঘুরলো ৫ সন্যাসী




মহেশপুরে ঐতিহ্যবাহী চড়কপূজায় পিঠে বড়শি গেঁথে ২৫ ফুট উপরে শুন্যে ঘুরলো ৫ সন্যাসী

প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

আপডেট টাইম : এপ্রিল ১৬ ২০১৮, ২৩:১৯ | 817 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

শামীম খান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ-  জলজ্যান্ত মানুষ বড়শিতে গাঁথা আবস্থায় চড়ক গাছে ঝুলে প্রায় ২৫ ফুট শূন্যে বাতাসা ছিটাতে ছিটাতে ঘুরলো একে একে ৫জন সন্যাসী। প্রতি বছরের মত এবারো সোমবার বিকালে চড়ক উৎসবে গাঁ শিউরে ওঠা এই দৃশ্য দেখলো প্রায় ২০-২৫ হাজার মানুষ।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর বকুলতলায় প্রতি বছর এ উৎসব আয়োজনে এই পূজা হয়ে থাকে। স্থানীয়রা জানায় প্রায় ২’শ বছর ধরে পঞ্জিকা মতে বৈশাখ মাসের ৩ তারিখে ঐতিহ্যবাহী এই পুজা হয়ে আসছে। পুজাকে ঘিরে বাংলা নববর্ষের শুরুতেই ৩ দিনব্যাপী এখানে চলে জমজমাট লোকজ মেলা।
মেলা ও চড়ক পুজার ঐতিহাসিক দিক নিয়ে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া যায়। অধিকাংশের মতে জানা যায়,আজকের এই মহেশপুরের (তৎকালীন সুলতানপুর) এক সময়ের শাসন কর্তা ছিলেন সূর্য় মাঝি। চক্রান্ত করে সূর্য় মাঝিকে হত্যার পর ১৭ জন ব্রাক্ষন সুলতানপুর পরগনার মালিকানা ভাগ করে নেয়। সেই সময়ের মহেশপুরের জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা পুরুষ হলেন হরিনারায়ন চৌধুরী। তার সময় জমিদাররা মহেশপুরের প্রভুত উন্নয়ন সাধন করে। চারিদিকে গড়ে উঠে বহু সুরমা প্রাসাদ। তখন বিভিন্ন ধরনের পুজা অনুষ্ঠিত হতো। পুজারীদের আনাগোনায় এ অঞ্চল থাকতো জমজমাট। এরও অনেক আগে মহেশপুরে হিন্দু ধর্মবলম্বীদের বসবাস ছিল। এজন্য ১১৮৫ খ্রিষ্টাব্দে মহেশ্বর (শিব) মন্দির স্থাপন করা হয়।
জনশ্রুতি আছে,কপোতাক্ষ ও বেতনা নদীর সংযোগস্থলে ধীরে ধীরে একটি নতুন চর জেগে ওঠে। এই চরে স্বয়ং আবিভুত হয় মহেস্বর মন্দির যার অন্য নাম বুড়ো শিব। তার নাম অনুসারেই প্রতিষ্টিত হয় মহেস্বর (শিব) মন্দির। এর কিছুকাল পরে ফতেপুর কপোতাক্ষ নদের পাশে আরো একটি চর জাগে। সেই চরে ফতেপুর এলাকার জমিদার বংশের লোকজন অন্যান্য পুজার সাথে চড়ক পুজা শুরু করে। ১৪৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সুন্দরানন্দ ঠাকুরের প্রচেষ্টায় এ পুজা শুরু করা হয়। মহেশপুর,ফতেপুর ও বর্জাপুর গ্রামে এখনো জমিদার বাড়ির শেষ চিহ্ন কালের সাক্ষি হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। এখনো মন্দিরে বিগ্রহ আছে। মহেশপুর পৌর সভার উত্তর পাশে এর অবস্থান। দেশ-বিদেশ থেকে এখানে ভক্তরা এসে থাকে।
অতীতে নাকি এই মেলা দেখতে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হত। কালক্রমে তা নিচে নেমে ২০/২৫ হাজারে দাড়িয়েছে। মহেশপুর উপজেলা সদর থেকে ৭/৮ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে কালিগঞ্জ-জীবননগর সড়কের ফতেপুর গ্রামের বকুলতলা বাজারে ৩ রা বৈশাখ এই মেলা ও পুজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর ৫/৭ জন শন্যাসীকে পিঠে বড়শি বিদ্ধ (স্থানীয় ভাষায় বান ফোঁড়ানো) করে শুন্যে ঘুরানো হয়। অতীতে এ সংখ্যা ছিল ১০/১২ জন।
এ ব্যাপারে চড়ক পুজা কমিটির সভাপতি স্বাধন কুমার ঘোষ জানান,এ বছর ৫ জন সন্যাসি চড়ক পাকে অংশগ্রহন করে। এবার যারা সন্যাসী সেজেছে বা পিঠে বড়সি ফুঁটিয়ে রশিতে বেঁধে চড়ক গাছে উঠে ঘুরেছে তারা হলেন, শ্রী অসিত কর্মকার (মনা),অধীর হালদার,মহাদেব হালদার,বসুরেফ বাবু রায় ও বিপ্লব কর্মকার। তিনি আরো জানান,এ দৃশ্য দেখা এবং কেনাকাটার জন্য এখনো ২০-৩০ হাজার নারী-পুরুষ ও ভক্তবৃন্দের সমাগম ঘটে। তবে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর মেলা জমজমাট হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সিরাজ জানিয়েছেন এই উৎসব পালনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হয়েছে।
এ দিকে এই মেলাকে কেন্দ্র করে মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ লস্কর জায়াদুল হক জানান চড়কপূজায় অপ্রীতিকর ঘটনা রধে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিলো।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET