৩রা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ১৮ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-
  • হোম
  • কুমিল্লা
  • মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্র আদরের মানববন্ধন ও র‌্যালী




মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্র আদরের মানববন্ধন ও র‌্যালী

প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

আপডেট টাইম : জানুয়ারি ০২ ২০১৮, ২৩:২৯ | 888 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

আজ কুমিল্লা মাসব্যাপী মাদকবিরোধী প্রচারণা মূলক কর্মসূচী উপলক্ষে আদর সমন্বিত মাদকাসক্তি পূণর্বাসন কেন্দ্র মানববন্ধন ও র‌্যালীসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধনে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র আদরের নির্বাহী পরিচালকনূরে আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম সেলিম।

এক যুগেরও বেশি সময় কাজ করে কুমিল্লা, হাউজিং এস্টেট অবস্থিত ‘আদর সমম্বিত আসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র। আমরা নেশাকে না বলি, গঠনমূলক চিন্তা করি, একাত্মতার গান গাইসহ বিজয়ের জন্য আত্মসমর্পণ করো এসব স্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠাটি যাত্রাশুরু করে।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম (সেলিম) তার কাছে জানতে চাই, মাদক নিরাময় কেন্দ্র কতটুকু সফল ও নিরাময় কেন্দ্রের দৃষ্টিতে কুমিল্লায় বর্তমান অবস্থা। আদর চেয়ারম্যানের তথ্যানুযায়ী, বেশির ভাগ মাদক আসক্তের বয়স ১৫-২৫ বছর, সংখ্যায়  ৩০-৪০ শতাংশ। ২৫-৩৫ বছর , সংখ্যায় ৩০ শতাংশ। বাকি ২৫-৩০ শতাংশ বিভিন্ন কারণে। ছাত্র রাজনীতিতে ব্যর্থতা ১৫-২৫ শতাংশ। ব্যক্তিগত হতাশা ও পারিবারিক হতাশা ২৫-৩৫ শতাংশ। আসক্তির সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে, ব্যক্তিগত জীবনে হতাশা, প্রেমে ব্যর্থতা, হতাশা, কৌতূহল, ছাত্র রাজনীতিতে ব্যর্থতা, বেকার জীবনের অভিশাপ, কর্মসংস্থানের সমস্যা, অপসংস্কৃতির কু-প্রভাব, আদর্শ ও মূল্যবোধ থেকে বিচ্যুতি হওয়াসহ মাদকদ্রব্য ক্রয়ের সহজলভ্যতা, স্বল্পমূল্যে ক্রয়ের সুবিধাই দায়ী। এই তথ্য আদর নিরাময় কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী।
প্রচলিত মাদকদ্রব্যের মধ্যে বহুল প্রচলিত- হেরোইন, কোকেন, ইয়াবা, অ্যামফিটামিন, ক্যাফিন, হেলুসিনোজেন, ডান্ডি, প্যাথেড্রিন, দেশীয় মাদকের মধ্যে, চৌরস, তামাক, বিড়ি, সিগারেট, প্রভৃতি মাদকদ্রব্য। এদের মধ্যে অতিমাত্রায় প্রচলিত ফেন্সিডিল শতকরা ২০ শতাংশ, ইয়াবা ৪০-৫০ শতাংশ, গাঁজা, মদ, ইনজেকশন ৩০ শতাংশ বহুল প্রচলিত। প্রায় অধিকাংশ শ্রেণী-পেশার মানুষ মাদক সেবনসহ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।
আদর তথ্যানুযায়ী আসক্তদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। এদের মধ্যে ৬০-৭০ শতাংশ চিকিৎসার পর সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যায়। বাকি ৩০ শতাংশ পুনরায় আসক্তি হয়ে পড়ে। পুনরায় আসক্তি হওয়ার কারণ হিসেবে বলেন, রোগীদের চিকিৎসা মেয়াদ শেষ হরে ৫-৭ মাস অবজার্ভেশনে থাকতে হয়। প্রতিকূল পরিবেশ, বেকারত্ব, পারিবারিক অশান্তি এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার এর মূল কারণ। আদর থেকে  ২০০৩- ২০১৪ সালের এ পর্যন্ত প্রায় ৮-১০ হাজারের মতো চিকিৎসা সেবা নিয়েছে। এদের মধ্যে ৬-৭ হাজার সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যায়। আদরসহ কুমিল্লার নিরাময় কেন্দ্রে ১৮০-২০০ আসক্তি বর্তমানে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। আদরে বর্তমান রোগীর সংখ্যা ২৫ জন। এবং আবাসিক চিকিৎসা নিচ্ছে ১০ জন।
এমনকি মেয়েদের মধ্যেও এর প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। পারিবারিক কলহ, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অমিল, অতিরিক্ত বিলাসী, পরকীয়া প্রেম, ছাত্রীদের ক্ষেত্রে অতি-স্বাধীনতা এর বিশেষ কারণ। মেয়েদের মধ্যে আসক্তদের মাত্র ১০ শতাংশ নিরাময় কেন্দ্রের সেবা নিচ্ছে। কুমিল্লাতে মেয়েদের মাদকাসক্ত নিরাময়  কেন্দ্রের সুবিধা না থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
বেশি সময় ধরে মাদক সেবনে দেহের কী কী সমস্যা হতে পারে? এর থেকে যুব সমাজকে উত্তরণের উপায় কী? জানতে চেয়েছিলাম, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, কাজর্কমে শূন্যতা আসবে, হাঁটার অবস্থা বিকলাঙ্গের মতো হবে, মাংসপেশী সংকুচিত হয়ে যাবে। হাঁটুর জয়েন্ট অক্ষম হয়ে যাবে, বিকৃতিকর রুচি আসবে, রক্তে নেশার প্রভাব কমে গেলেই আবার নেশা করার জন্য পাগলের মতো ছোটাছুটি করবে। সাধারণত কোন কাজর্কম তার ভালো লাগবে না। পুনরায় নেশা করার জন্য অর্থ Rambo নেশা করতে পারলে দুর্ঘটনা ঘটাবে। কার সাথে কি ব্যবহার করবে তা ভুলে যাবে, সামান্য ব্যাপারে খাম-খেয়ালি করাসহ দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যাবে এবং অনেকের ক্ষেত্রে যৌবন শক্তি হারিয়ে যাবে। তিনি মনে করেণ, আজ নতুন প্রজন্ম মাদকের করাল গ্রাসে জর্জরিত। কিন্তু দঃখের বিষয় নতুন প্রজন্ম বড়ই হতাশ। তারা জানে না কী তাদের করণীয়। যারা আগামী বাংলাদেশ তথা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিবে তারাই আজ হতাশ। তারাই আজ আসক্ত, তারাই আজ অবুঝ, তারাই আজ লাগামহীন ।
পরিশেষে বলতে চাই, যুবসমাজ যদি মরণ ছোবল মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে তবে জাতি হবে মেধাশূন্য এ থেকে পরিত্রাণের উপায়। প্রথমে মাদকদ্রব্য ক্রয়ে সুবিধা বন্ধ করতে হবে। প্রশাসনকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। সকল প্রচার মাধ্যমে সচেতমূলক প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। এবং বর্তমানে বিক্রয় এর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই হয়তো মাদক ও মাদকাসক্তি নামক শব্দ আর কারো মুখে উচ্চারণ হবে না। এই প্রত্যাশায় রইলাম।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET