সন্দেহভাজন জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলার অজুহাতে মিয়ানমারে ঢুকে পড়লো ভারতীয় বাহিনী। গভীর জঙ্গলে ভারতের ওই অভিযানে অন্তত ৮ সন্দেহভাজন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র।
আরো ১৮ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে মিয়ানমার সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে তাদের ভারতে আনা হবে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, যে জঙ্গি ঘাঁটিতে তারা অভিযান চালিয়েছে সেটি মিয়ানমারের ১৬ কিলোমিটার ভিতরে। গভীর জঙ্গলে ঢাকা ওই পার্বত্য এলাকা বেশ দুর্গম। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীও সহজে ওই অঞ্চলে পৌঁছতে পারে না।
তাই ওই দুর্গম এলাকাতেই নিজেদের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি বানিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের জঙ্গিরা। মণিপুর, আসাম, নাগাল্যান্ড-সহ বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা চালিয়ে মায়ানমারের ওই জঙ্গলেই আশ্রয় নেয় জঙ্গিরা।
মণিপুর উপত্যকায় যে সব জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় সেগুলি পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কোরকম (কোর কমিটি) নামে একটি যৌথ মঞ্চ গড়ে তুলেছে। ভারতীয় বাহিনী সেই কোরকমের দুর্ভেদ্য ঘাঁটিতেই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে একটি ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক।
মিয়ানমারে ঢুকে ভারতীয় বাহিনীর অভিযান কূটনৈতিক প্রেক্ষিতে খুব সহজ বিষয় নয়। কিন্তু উত্তর-পূর্ব ভারতে নাশকতা রুখতে এই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো খুব জরুরি ছিল। তাই দিল্লিতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অভিযানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তারপর আসাম রাইফেলসকে মায়ানমারে ঢুকে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০১৫ সালের জুন মাসেও মিয়ানমারে ঢুকে অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী। এক বছর কাটার আগেই দ্বিতীয়বার মায়ানমারে ঢুকে পড়লো ভারত।
এবারের অভিযানে ৮ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেলেও, সেই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে সেনা সূত্রের খবর। অভিযান এখনো শেষ হয়নি। তবে আসাম রাইফেলস এখনো মিয়ানমারের মধ্যেই রয়েছে, নাকি ভারতীয় সীমান্তে ফিরে এসেছে, সে সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। সেনাবাহিনীর থ্রি কোর-এর জেনারেল অফিসার কম্যান্ডিং-এর (জিওসি) তত্ত্বাবধানে এই অভিযান চলছে বলে জানানো হয়েছে।
গত বছর ২২ মে মণিপুরে ভারতীয় সেনার উপর ভয়ঙ্কর হামলা চালিয়েছিল কোরকম। সেই হামলায় সিক্স ডোগরা রেজিমেন্টের ১৭ সদস্য নিহত হয়। আরো ১৬ জন আহত হয়।
তারপর মিয়ানমারে ঢুকে আক্রমণ চালিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী। এক বছরের মাথায় আবার হামলা চালিয়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বড় সাফল্যের দাবি করছে তারা।