গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে চোর অপবাদ দিয়ে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে আহত ও এসিড জাতীয় পদার্থ ঢেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে তার মুখ ও দুই চোখের দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হয়ে গেছে। শুক্রবার রাতে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ওই ব্যক্তি কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের ছোট খারকান্দি গ্রামের আব্দুর রহমান শেখের ছেলে আবু বক্কর শেখ (৪০)।
চিকিৎসাধীন আবু বক্কর শেখ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে প্রতিপক্ষ নয়ন শেখ পাশের ফজর আলী শেখের বাড়িতে চোর এসেছে বলে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর প্রতিপক্ষ সাজাইল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জুলু মেম্বারের উপস্থিতিতে নয়ন শেখ, তারা মিয়া, আলম মিয়া, ফজর আলীসহ বেশ কয়েকজন তাকে চোর বলে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর তাকে মারধর করে তার মুখে এসিড ঢেলে দেয় এবং ফজর আলীর বাড়িতে সারারাত আটকে রাখে।
আহত আবু বক্কর শেখের স্ত্রী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তিনি বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে খবর পেয়ে বাড়িতে এসে এ অবস্থা দেখতে পান। তিনি আরো বলেন, জুলু মেম্বারসহ এলাকার মাতব্বররা সকালে আমার স্বামীকে বাড়িতে নিয়ে আসে। আর ভয়-ভীতি দিয়ে বলেন তারা বাড়িতেই তার স্বামীর চিকিৎসা করিয়ে দিবেন। গ্রাম্য একজন চিকিৎসক এনে কিছু ওষুধপত্র দিয়ে যান। কিন্তু পরে আর কোনো খবর না নেয়ায় আমি আমার স্বামীকে নিয়ে শুক্রবার বিকেলে কাশিয়ানী থানায় নিয়ে যাই। পুলিশ তাকে আগে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতে বলেন। পরে আমি তাকে নিয়ে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক গোপালগঞ্জ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ফারুক আহম্মেদ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে তার মুখে দাহ্য জাতীয় তরল কোনো পদার্থ ঢেলে দেয়া হয়েছে। এতে তার মুখ কালো বর্ণ ধারণ করেছে এবং দুইটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে তার মুখে এসিড না অন্য কোনো পদার্থ দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত ইউপি জুলু মেম্বারের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, গ্রামের লোকজন বলেছে আবু বক্কর শেখ চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। সেখানে হয়তো তার উপর নির্যাতন চলেছে। তবে কেউ এখনও এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি, অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।