
এস এম শামীম, আগৈলঝাড়া (বরিশাল)
মেয়ের ননদের (ঝিয়োরী) সাথে প্রভাবশালী ইউপি সদস্য তাওই’র পরকীয়ার কারণে এক সৌদি প্রবাসীর সুখের সংসার ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাচ্ছে। ঘটনাটি জেলার মুলাদী উপজেলার চরকালেখান গ্রামের। বিষয়টি মঙ্গলবার সকালে সর্বত্র ছড়িয়ে পরলে এনিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ওই গ্রামের আলতাফ হোসেন রাঢ়ীর পুত্র সৌদি প্রবাসী হাবিবুর রহমান (২৬) জানান, দীর্ঘদিন পূর্বে সে সামাজিকভাবে একই গ্রামের বাকিউল্লাহ সরদারের কন্যা সোনিয়া আক্তারকে (২২) বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হাবিবুর রহমান প্রবাসে থাকার সুবাদে চরকালেখান ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও তিন সন্তানের জনক সাইফুল ইসলাম রুস্তুম তার আপন মেয়ের ননদ সোনিয়া বেগমের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
প্রবাসী হাবিবুর রহমান আরও জানান, গত দুইমাস পূর্বে তিনি ছুটিতে দেশে ফিরে লোকমুখে পরকীয়ার বিষয়টি শুনে স্ত্রীর ওপর নজরদারি বৃদ্ধি করেন। একপর্যায়ে তাওই’র (ইউপি সদস্য রুস্তুম) সাথে তার স্ত্রী সোনিয়া বেগমের আপত্তিকর ফোনালাপের রেকর্ডিং উদ্ধার করে গোপন রাখেন। পরবর্তীতে সে (হাবিবুর রহমান) প্রবাসে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে চরকালেখান বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করেন। স্ত্রী সোনিয়ার অনুরোধ উপেক্ষা করে পূর্ণরায় প্রবাসে না গিয়ে নিজ এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে স্থায়ী বসবাস করায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত পাঁচদিন পূর্বে সোনিয়া বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্ঠা করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার পর সোনিয়া বেগম সুস্থ্য হয়ে রবিবার তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। সোমবার সন্ধ্যায় স্ত্রীকে (সোনিয়া) আনতে তার বাবার বাড়িতে গেলে সে হাবিবুর রহমানের সংসার করবেনা বলে জানিয়ে দেয়।
হাবিবুর রহমানের দেয়া তথ্যে আরও জানা গেছে, এসময় তিনি শ্বশুড় বাড়ির লোকজনদের কাছে পরকীয়ার বিষয়টি ফাঁস করে উদ্ধার করা ফোনালাপের রেকর্ডিংটি শোনানোর পর সোনিয়া বেগম অকপটে জানিয়ে দেয় সে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম রুস্তুমের সাথে নতুন করে সংসার শুরু করবেন। এসময় বিষয়টি শুনে (সোমবার সন্ধ্যায়) প্রতিবেশী মধ্যগাছুয়া গ্রামের মৃত মাস্টার আব্দুর রহমানের পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল তার ফেসবুকে আইডিতে তাওই’র সাথে ঝিয়োরীর পরকীয়া নিয়ে একটি স্টাটাস লিখে পোস্ট করেন। মুহুর্তের মধ্যে বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় পুরো মুলাদী উপজেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রভাবশালী ইউপি সদস্য রুস্তুম ও তার সহযোগীরা জুয়েলকে মারধর করে প্রভাবখাটিয়ে থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করেন।
স্থানীয়রা জানান, জুলেয়কে থানায় আটক করে রাখার খবর পেয়ে হাবিবুর রহমান ওইদিন রাতেই পরকীয়ার আপত্তিকর ফোনালাপের রেকর্ডিং থানা পুলিশকে শোনানোর পর পুলিশ আটককৃত জুয়েলকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে নিজের উপার্জিত অর্থ ও স্বর্ণালংকার ফেরত পেতে স্ত্রী সোনিয়া বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম রুস্তুমের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন হাবিবুর রহমান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম রুস্তুমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিফ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।