বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বেড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হামলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। এর মধ্যে রয়েছেন উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি পীযূষ কান্তি মজুমদার (৫৮)। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও নিরাপত্তার দাবিতে ইতিমধ্যে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে মংলা পূজা উদযাপন কমিটি এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতা রুখতে পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম আজিজুল ইসলাম।
রোববার মোংলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন জানান, ভোট গণনা শেষে উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান চিংড়ি প্রতীকের প্রার্থী মো. আবু তাহের হাওলাদার পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। রাতে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণার পরপরই বিভিন্ন এলাকায় তার সমর্থকদের উপর হামলা ও তান্ডব চালাতে থাকে বিজয়ী চেয়ারম্যান মোঃ আবু তাহের হাওলাদারের সমর্থকেরা।
নির্বাচনের দিন রাতেই বুড়ির ডাঙ্গা সানবান্ধা আবাসন এলাকার আনারসের কর্মী বাবুলের দোকানে হামলা ও ভাঙচুরসহ তাকে মারপিট করা হয়। পরের দিন সকালে উপজেলার চৌকিদারের মোড় এলাকায় আনারসের কর্মী ইউসুফ, সাইদুল, চিলা ব্রিজের গোড়াখাল এলাকার প্রভুদান হালদারের উপর হামলা চালায় আবু তাহের হাওলাদারের ক্যাডার বাহিনী। তাছাড়া পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আনারসের সমর্থকদের উপর বিচ্ছিন্নভাবে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার সকালে পাগলের মোড় এলাকায় চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই হাবিবের নেতৃত্বে আতর্কিত হামলা চালায় আনারসের সমর্থক মোংলা পুজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি পীযূষ কান্তি মজুমদারের উপর। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে মোংলা থানা পুলিশ। হামলার প্রতিবাদে ঐদিন দুপুরে মোংলা পৌর মার্কেটের সামনে মানববন্ধন পালন করে পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।সমাবেশে তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী কর্তৃক পীযূষ মন্ডলের উপর হামলার বিচারসহ আনারস প্রতীকের সমর্থকদের নিরাপত্তার দাবী জানান।
পরপর তিনবার নির্বাচিত মংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার জানান, পরাজিত কোন প্রার্থীর কর্মী বা সমর্থকদের উপর হামলা ও সহিংসতার কোন ঘটনায় জড়িত নন তিনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভোট গণনার পর মিঠাখালী ইউনিয়ন এলাকায় পরাজিত প্রার্থী ইব্রাহিম হাওলাদার এর ক্যাডার বাহিনী মহিলা সহ তার তিন কর্মীর উপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। তাদের মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা, শাহীন জানান, সহিংসতার শিকার এ পর্যন্ত ১৬ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৮ জনের অবস্থা গুরুতর। তারা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত চারটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলা ও সহিংসতা রোধে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় টহল জোরদার করেছে।
Please follow and like us: