যশোর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় এ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে পাঁচজন মারা গেছেন। করোনা ইউনিট ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১১৮ জন ভর্তি আছেন। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিআই) একজন চিকিৎসাধীন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়েছে ঢাকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাজেদা ফাউন্ডেশন। আগামী দুই মাসের জন্যে এ প্রতিষ্ঠান থেকে বিনা মূল্যে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।
আজ থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে হাসপাতালে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী জেলা যশোরে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই করোনায় দু-চারজনের মৃত্যু হচ্ছে।
হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে শয্যার চেয়ে দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হচ্ছেন। রোগীর চাপ প্রতিদিনই বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম অবস্থায় পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ পরিস্থিতিতে দুই মাস আগে জনবল নিয়োগ ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ হাসপাতালে তিন শয্যার আইসিইউ চালু করা হয়েছে। ফলে করোনা সামাল দিতে গিয়ে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হয়।
এ অবস্থায় করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবায় হাত বাড়িয়ে দেওয়া ঢাকার কেরানীগঞ্জের সাজেদা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠান। পরে মহাপরিচালক ও পরিচালকের চিঠির ভিত্তিতে গতকাল সাজেদা ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চুক্তি সই হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান বলেন, আগামী দুই মাসের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে সাজেদা ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। কোনো ধরনের আর্থিক সুবিধা না নিয়েই প্রতিষ্ঠানটি এ হাসপাতালের করোনা চিকিৎসাসেবা পরিচালনা করবে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান আরও জানান, করোনা চিকিৎসাসেবা পরিচালনার জন্য ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ চিকিৎসক, ১০ নার্স, প্যারামেডিকেল ডিপ্লোমাধারী ১২ ব্রাদার এবং ১০ ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী এ হাসপাতালে কাজ করবেন।
এ ছাড়া পাঁচটি হাই ফ্লো নাজাল যন্ত্রসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, অক্সিজেন, ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামও সরবরাহ করা হবে বলে চুক্তিতে রয়েছে। আজ থেকেই তাদের সরঞ্জাম হাসপাতালে আসা শুরু করেছে।
সাজেদা ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য যশোরের রামনগর এলাকার আরআরএফ রিসোর্ট দুই মাসের জন্যে ভাড়া করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সাজেদা ফাউন্ডেশন পরিচালিত সাজেদা হাসপাতালের কোভিড ইউনিট প্রধান (ইনচার্জ) ইবনে নাকিব বলেন, ‘যশোর জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিট পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য জনবল এবং চিকিৎসার অত্যাধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে আমরা নারায়ণগঞ্জে ১ হাজার ২২ ও ঢাকার কেরানীগঞ্জে সাজেদা হাসপাতালের মাধ্যমে ১৩০ করোনা রোগীর বিনা মূল্যে চিকিৎসা করেছি। ঢাকায় এখন করোনা রোগী কম। এ জন্য আমরা সীমান্তবর্তী জেলা হিসেবে যশোরকে বেছে নিয়েছি। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে দুই মাস যশোরে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।’