আব্দুল আজিজ, হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:- পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য (এমইপি) কমিয়েছে ভারত। এর জের ধরে দেশের বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমার কথা। তবে দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। এখানকার পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহের কম সময়ের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ৭ টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা। পেঁয়াজের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে পণ্যটির আমদানি কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা।
বর্তমানে হিলি স্থলবন্দরে ভারতের ইন্দোর ও নাসিক থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। গতকাল স্থানীয় পেঁয়াজের আড়তগুলো ঘুরে পাইকারি পর্যায়ে (ট্রাকসেল) এ দুই জাতের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। পাঁচ-ছয়দিন আগেও এসব পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৪২-৪৪ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সে হিসাবে এক সপ্তাহের কম ব্যবধানে পণ্যটির দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ৭ টাকা বেড়েছে। পাইকারির তুলনায় খুচরা বাজারে আমদানি করা এসব পেঁয়াজের দাম বেশি বেড়েছে। স্থানীয় খুচরা বাজারে এসব পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ৫৫-৬০ টাকায়। পাঁচ-ছয়দিন আগেও পণ্যটির দাম ছিল কেজিপ্রতি ৪২-৪৫ টাকা। সে হিসাবে খুচরা বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা।
ভারতের বাজারে সরবরাহ বাড়ার কারণে দেশটির সরকার গত সপ্তাহে পেঁয়াজের এমইপি টনপ্রতি ৮৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৭০২ ডলার নির্ধারণ করে দেয়। এর ফলে দেশের বাজারে আমদানি বেড়ে পেঁয়াজের দাম কমে আসবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে বাস্তবে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। হিলি স্থলবন্দর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আগে এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন ২৫-৩০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা ১০-১২ ট্রাকে নেমে এসেছে। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ২০ জানুয়ারি ১৫টি ট্রাকে ৩০০ টন, ২১ জানুয়ারি চারটি ট্রাকে ৮০ টন, ২২ জানুয়ারি ২২টি ট্রাকে ৪৪০ টন, ২৩ জানুয়ারি সাতটি ট্রাকে ১৪০ টন, ২৪ জানুয়ারি পাঁচটি ট্রাকে ১০০ টন, ২৫ জানুয়ারি ১৫টি ট্রাকে ৩০০ টন ও ২৭ জানুয়ারি ১১টি ট্রাকে ২২০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। গত এক সপ্তাহে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৭৯টি ট্রাকে মোট ১ হাজার ৫৮০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
স্থানীয় পেঁয়াজ আমদানিকারক মো. হারুন উর রশীদ হারুন প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, বাজারে দেশে উৎপাদিত নতুন মৌসুমের পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। পণ্যটির দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় বেচাকেনাও বেশি হচ্ছে। মূলত এ কারণে স্থানীয় আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে পণ্যটির দামে। ভারতের বাজারে রফতানি মূল্য কমার পরও সরবরাহ হ্রাসের জের ধরে কারণে কম সময়ের ব্যবধানে দেশের বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।