
নাজিম হাসান,রাজশাহী :
রাজশাহী থেকে এবার বিষমুক্ত প্রায় ১০০ টন আম যাবে চীন ও ইউরোপে। যা ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে বলে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী। তিনি বলেন, গত বছর ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা রাজশাহীর ৩০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানী করা হয়েছে। এবার ১০০ মেট্রিক টন রপ্তানী যোগ্য করতে ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজশাহীতে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ বাড়ছে। এ পদ্ধতিতে আম চাষ করলে কিটনাশকের ব্যবহার প্রয়োজন হয় না। ফলে সম্পন্ন বিষমুক্ত আম পাওয়া যায়। দেব দুলাল বলেন, ২০১৫ সালে চীন থেকে আমদানি করা একটি বিশেষ জাতের ব্যাগ দিয়ে এ পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলক আম চাষ শুরু হয়। আমের বয়স যখন ৪০ থেকে ৪৫ দিন তখন ফ্রুট ব্যাগিং করতে হয়। এরপর থেকে আমে কোন ধরণের কিটনাশক স্প্রে করতে হয় না। পবার হরিপুরের কসবার বাগান মালিক আলহাজ্ব আব্দুর রশিদের মেয়ে জামাই নাসির উদ্দিন জানান, গত বছর থেকে এই বাগানে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ করা হচ্ছে। আব্দুর রশিদের ছেলে ড. সরফুদ্দিন গত বছর পরীক্ষামুলকভাবে বাগানে এই পদ্ধতি নিয়ে আসেন। এতে স্বাভাবিক বাজারের চেয়ে অনেক বেশী দামে আম বিক্রি হয়। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের আমাদের এই দেশ। আবার আমের সময়ই ঝড় হয়ে থাকে। আমে ফ্রুট ব্যাগিং থাকলে অনেক আম রক্ষা পায়। এরপরেও আম ডালে ডালে আছাড় খেয়ে নষ্ট হয় না। ড. সরফুদ্দিন বলেন, আম রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হলে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহারের বিকল্প নেই। এই ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আমচাষ করলে রোগবালাই না থাকায় ফলন অনেক বেশী হয়। তিনিই রাজশাহীতে আমচাষে ব্যাগিং পদ্ধতি প্রথম চালু করেন। এই পদ্ধতিতে আমচাষ করলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। এই পদ্ধতিতে আমচাষ করলে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়না। তা না হলে বাগানে কয়েকবার কিটনাশক স্প্রে করতে হয়। এতে আম চাষে খরচও কম হয় বলেন তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, রাজশাহীতে এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। এ মৌসুমে ২ লাখ মেট্রিক টনের বেশী আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা গত বছর উৎপাদন ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টন। রাজশাহী জেলায় আমের বাগান রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার আম এসেছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৪৮০ গাছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ২৫ মে থেকে প্রথম পর্যায়ে গোপালভোগ আম নামানো শুরু হবে। তবে ইতোমধ্যেই আগাম জাতের কিছু আম নামানো শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।