
রাজশাহীর বাগমারায় পুকুর সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারী মোহনপুরের ফসলি জমি খেকো মাজহারুল ইসলাম চপল (৩৬), নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
মঙ্গলবার (৬ মে) বিকাল ৫টায় বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহাবুবুল ইসলাম এর নেতৃত্বে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় তাকে দুই লাখ টাকার অর্থদ- অনাদায়ে দুই মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন।
আটক মাজহারুল ইসলাম চপল (৩৬), সে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, গৃহবধূ রোকসানা বেগম (৪৬), ও তাঁর দেবর গোলাম রহমান মিলে বাড়ির পাশে হড়মবিলে ২৯ শতক জমিতে এবার বোরো চাষ করেছিলেন। ওই জমিই তাঁদের সম্বল। ধানগুলোতে পাক ধরেছিল। কয়েকদিন পরেই ঘরে তুলতে পারতেন ধান। তবে এর আগেই প্রভাবশালী বিদ্যুৎ হোসেন লোকজন নিয়ে গৃহবধূ রোকসানা বেগমসহ কয়েকজন কৃষকের প্রায় ১০০ বিঘা জমির চারপাশে মাটির সীমানা দিয়ে ঘিরে ফেলেন পুকুর খননের জন্য।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকালে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে পুকুর খনন বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি আটক মাজহারুল ইসলাম চপলকে (৩৬) দুই লাখ টাকার অর্থদ- অনাদায়ে দুই মাসের কারাদন্ড রায় প্রদান করেন। একই সময়ে পুকুর খননের কাজে ব্যবহার করা এক্সেভেটরের ক্ষতি করেন।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের করখন্ড গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী বিদ্যুৎ হোসেন কিছুদিন আগে পশ্চিম দৌলতপুর গ্রামের অর্ধশতাধিক কৃষকের জমি দখল করে পুকুর খননের প্রক্রিয়া শুরু করেন। ওইসব জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। তিনি এক্সেভেটর দিয়ে প্রায় ১০০ বিঘা জমির চারপাশে ঘিরে ফেলে পুকুর খনন শুরু করেন। এসময় জমির মালিকেরা বাধা দিতে গেলে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে হুমকী দেওয়া হয়। নিরুপায়ে কৃষকদের পক্ষে গৃহবধূর স্বামী মাইনুদ্দিনসহ দুই ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
স্থানীয় অর্ধশত কৃষক জানান, ভাড়াটে লোকজন নিয়ে তাঁদের ধানচাষ করা জমি দখল করে পুকুর খনন শুরু করে এই মাজহারুল ইসলাম ওরফে চপল। জমির চারপাশে লোকজন পাহারা বসিয়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে। তবে অভিযানের পরেই তাঁদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত বিদ্যুৎ হোসেনের সঙ্গে কয়েক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক মাহবুবুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের জমি দখল করে পুকুর খননের দৃশ্য দেখা গেছে। এই বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কৃষকদের জমি উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।