রাজশাহী মহানগরীর বালিয়াপুকুর বিদ্যানিকেতন স্কুলে একতরফা ও অবৈধ কমিটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। স্কুলটি ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও অদক্ষ ও অযোগ্য কিছু শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে অবৈধ পন্থায় অজ্ঞাত খুটির জোরে কমিটির সভাপতি মোঃ শামসুদ্দীন রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে। এ নিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পথে, চায়ের দোকানে ও বিভিন্ন স্থানে এ নিয়ে আলোচনা ও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। একাধীক স্থানীয়রা জানান, স্কুলটিতে ৭সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত নানা অনিয়মে জর্জারিত করেছেন কমিটির সভাপতি মোঃ শামসুদ্দীন। যেমন, স্কুলে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়না, বার্ষিক ক্রীড়া নেই, এছাড়াও এলাকার কথিত নারী ও মাদক কারবারী আব্দুল হান্নান বর্তমান স্কুল কমিটির সদস্য। তবে তার কোন ছেলে মেয়ে স্কুলটিতে পড়াশোনা করেন না। এছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার পরও একজন আয়া সেই কমিটির সদস্য বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের একজন কর্মচারী জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মোকলেসুর রহমান হিরু (ক্রিড়া শিক্ষক), তাকে ভারপ্রাপ্ত থেকে প্রধান শিক্ষকের চেয়ার বসানোর লক্ষ্যেই স্কুলে একটি নিয়োগ ছাড়া হয়েছে। সেখানে অন্যান্য পদের নিয়োগও উল্লেখ্য রয়েছে। তবে এই নিয়োগ স্থগিতের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, স্কুলে পূর্বের ভাবমূর্তী ও সঠিক পাঠদান ফেরাতে বর্তমান কমিটি বিলুপ্তির কোন বিকল্প নাই। আর তাই এই নিয়োগ স্থগিত এবং বর্তমান কমিটি বিলুপ্তির দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।
বিগত দিনে স্কুল কমিটি শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব নুরুলহুনা ২০/০১/৮৫ ইং প্রফেসর মোঃ মারশেদ আলী (সহযোগী অধ্যাপক) ৩০/৮/১৯৯৪ ইং থেকে ২৬/৮/১৯৯৭ মোঃ আঃ সবুর অতিরিক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ২৭/৮/১৯৯৭ প্রভাত কুমার দাস অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। ৭/৯/২০০ইং থেকে ১১/৬/২০০০ ইং। কমলেপ কুমার দাস (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা) মোঃ কুরবান আলী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও উন্নয়ন)১৭/৬/২০০৩ ইং থেকে ৫/৪/২০০৪ ইং। এসে এমন জাহিদুল করিম (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) ৬/৪/২০০৪ থেকে ৯/১০/২০০৬ ইং সত্যেন্দ্র কুমার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (১০/১০/২০০৬ থেকে ২/৮/২০০৯ ইং পর্যন্ত কার্যদিবস পর্যন্ত কিন্তু ওই স্কুলের নীতিমালা তোয়াক্কা না করেই অদৃশ্য শক্তির বলে একটানা ২০০৯ সাল থেকে অদ্যবধি ২০২৪ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ একটানা ১৫ বছর সভাপতির দায়িত্বে বহাল আছেন মোঃ শামসুদ্দীন। সাবেক কাউন্সিলর মোঃ আনোয়ারুল আমীন আজব-সহ বিতর্কীত কিছু ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে এক তরফা কমিটি গঠন করে স্কুল সংস্কারে নামে লুটপাট ও নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে বাঘা-চারঘাটের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয় বলে একাধীক সূত্রে জানা গেছে। নতুন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সময় আগ্রীম কল্যান তহবিল ও বার্ষিক পিকনিকের টাকা গ্রহন করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু করোনার পর থেকে আজ অবদী কোন পিকিনিক হয়না স্কুলটিতে। স্কুলের শিক্ষার মান ও পাশের হার ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে। প্রভাবশালী কমিটির বিরুদ্ধে কেউ কোন প্রতিবাদ করার সাহস পায়না বলেও জানা যায়।
এ ব্যপারে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে, অত্র স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মোকলেসুর রহমান হিরু জানান, স্কুলে কোন অনিয়ম ও দূর্ণীতি হয় না। করোনার পর থেকে স্কুলে কোন পিকনিকের আয়োজন করা হয়নি এবং কোন চাঁদা শিক্ষার্থীদের নিকট নেয়া হয়না।
এ ব্যপারে অত্র স্কুল কমিটির সভাপতি, মোঃ শামসুদ্দীনের মুঠো ফোনে একাধীক বার দেয়া হয়। তবে তার মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের স্কুল পরিদর্শক মোঃ জিয়াউল হক জানান, বিধি অনুয়ায়ী একজন সভাপতি দুই মেয়াদ অর্থাৎ ৫ বছর করে ১০বছরের বেশি থাকতে পারেনা। তবে ওই স্কুলের সভাপতির ১৫ বছর মেয়াদকাল চলছে বিষয়টি আমার জানা নেই। শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান স্যার বরাবর একটি দরখাস্ত দিলে আমার উপর তদন্তভার আসবে। তখন বিষয়টি তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।