২০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-




“রোহিঙ্গাদের জন্ম কোথায়?

মোহাম্মদ ইমন মিয়া, বাঙ্গরা,কুমিল্লা করেসপন্ডেন্ট।

আপডেট টাইম : ডিসেম্বর ২৫ ২০১৮, ১৮:৩৯ | 885 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

  –নবীন লেখক মোঃ ফিরোজ খান

মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের (রাখাইন)
হলো রোহিঙ্গাদের বর্তমানের রাজ‍্য।রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আধুনিক লিখিত ভাষাই হল রোহিঙ্গাদের ভাষা। এই ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত যার সাথে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার অনেকটা মিল রয়েছে। ষরোহিঙ্গা গবেষকগণ আরবি, হানিফি,উর্দু, রোমান এবং বার্মিজ স্ক্রীপ্ট ব্যবহার করে সফলতার সাথে রোহিঙ্গা ভাষা লিখতে সক্ষম হয়েছেন।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মূলত ইসলাম ধর্মের অনুসারী।যেহেতু বার্মা সরকার তাদের পড়াশুনার সুযোগ দেয় না, তাই অনেকেই মোলিক ইসলামী শিক্ষাকেইএকমাত্র পড়াশুনার বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেছে।

অধিকাংশ গ্রামেই মসজিদ এবং মাদ্রাসা
(ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) রয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে, পুরুষরা জামাতে এবং মহিলারা বাড়িতেই প্রার্থণা করে থাকে।বার্মায় ধর্মরত সম্প্রদায়ের মধ্যে (২০১০)সাল পযর্ন্ত একটি সমিক্ষায় পাওয়া যায়,বিভিন্ন ধর্মের একটি সমিক্ষা।
বৌদ্ধ (৮০%) বর্মি লোক ধর্ম (৬%)প্রোটেস্ট্যান্ট (৫%) ইসলাম (৪%) ক্যাথোলিক (২%)  হিন্দুধর্ম (২%) অন্যান্য (১%)

মায়ানমার একটি বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র।

মায়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘুরা ভারত থেকে আগত(যাএখন বাংলাদেশ হয়েছে) মুসলমানদেরবংশধরএবংচীন(মায়ানমারে চীনের মুসলমানদেপূর্বপুরুষ ইউন্নান প্রদেশ থেকে এসেছে) এবং পূর্ববর্তী আরববাসিন্দাদের উত্তরপুরুষ এবং স্বীকৃত কমেইন সংখ্যালঘুদের বংশধর এবং রোহিঙ্গা জাতি, পাশাপাশি মায়ানমারের স্থানীয় জাতিসমূহের সাথে আন্তঃবিবাহিতরা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, বার্মার সরকার রোহিঙ্গা নাগরিকদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করেছে যারা ১৮২৩ সালের আগে, ব্রিটিশদখলদারিত্বের শুরুতে এখনকার রাখাইন রাজ্যে (যা আরাকান নামেও পরিচিত)।

দেশটিতে তাদের পূর্বপুরুষদের বসতি স্থাপনের প্রমাণ করতে পারে না। বর্তমান মিয়ানমারের “রোসাং” এর অপভ্রংশ “রোহাং” (আরাকানের মধ্যযুগীয় নাম) এলাকায় এ জনগোষ্ঠীর বসবাস। আরাকানের প্রাচীন নাম রূহ্ম জনপদ। ইতিহাস ও ভূগোল বলছে, রাখাইন প্রদেশে পূর্ব ভারত হতে প্রায় খৃষ্টপূর্ব ১৫০০ বছর পূর্বে অষ্ট্রিক জাতির একটি শাখা “কুরুখ” (Kurukh) নৃগোষ্ঠী প্রথম বসতি স্থাপন করে, ক্রমান্বয়ে বাঙালি হিন্দু (পরব্রতীকালে ধরমান্তরিত মুস্লিম)পার্সিয়ান, তুর্কি,মোগল,আরবীয় ও পাঠানরা বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর বসতি স্থাপন করেছে। এ সকল নৃগোষ্ঠীর শংকরজাত জনগোষ্ঠী হলো এই রোহিঙ্গা। বস্তুত রোহিঙ্গারা হল আরাকানের বা রাখাইনের একমাত্র ভুমিপুত্র জাতি। তাদের কথ্য ভাষায় চট্টগ্রামের স্থানীয় উচ্চারণের প্রভাব রয়েছে। উর্দু, হিন্দি, আরবি শব্দও রয়েছে। পক্ষান্তরে ১০৪৪ খ্রিষ্টাব্দে আরাকান রাজ্য দখলদার কট্টর বৌদ্ধ বর্মী রাজা “আনাওহতা”।

(Anawahta) মগদের বারমা থেকে দক্ষিণাঞ্চলে রোহিংগাদের বিতাড়িত করে বৌদ্ধ বসতি স্থাপন করান। রাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বসবাস দক্ষিণে বামার বংশোদ্ভুত ‘মগ’ ও উত্তরে ভারতীয় বংশোদ্ভুত ‘রোহিঙ্গা’। মগরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। মগের মুল্লুক কথাটি বাংলাদেশে পরিচিত। দস্যুবৃত্তির কারণেই এমন নাম হয়েছে ‘মগ’দের। এক সময় তাদের দৌরাত্ম্য ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মোগলরা তাদের তাড়া করে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়।রাখাইন শব্দটি এসেছে পালী শব্দ রাক্ষাপুরা থেকে, যার সংস্কৃত প্রতিশব্দ হলো রাক্ষসপুরা। অর্থাৎ রাক্ষসদের আবাসভুমি। প্রাচীন হিন্দু ধরমীয় শাস্ত্রাদিতে অস্ট্রিক (অষ্ট্রোলয়েড) মহাজাতিকে রাক্ষস জাতি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়াছিল। মজার ব্যাপার হলো- মগ জাতির কিন্তু অষ্ট্রোলয়েড মহাজাতির সাথে কোন সম্পরক নেই, তারা মঙ্গোলয়েড মহাজাতি অন্তর্ভুক্ত জাতি।রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে একটি প্রচলিত গল্প রয়েছে এভাবে সপ্তম শতাব্দীতে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন উপকূলে আশ্রয় নিয়ে বলেন, আল্লাহর রহমে বেঁচে গেছি। এই রহম থেকেই এসেছে রোহিঙ্গা।

তবে,মধ্যযুগে ওখানকার রাজসভার বাংলা সাহিত্যের লেখকরা ঐ রাজ্যকে রোসাং বা রোসাঙ্গ রাজ্য হিসাবে উল্লেখ করেছেন। রোসাঙ্গ রাজ্যের রাজভাষা ফার্সী ভাষার সাথে বাংলা ভাষাও রাজসভায় সমাদৃত ছিল।
ইতিহাস থেকে একথা জানা যায় যে, ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহাঙ্গা স্বাধীন রাজ্য ছিল। মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর চরম বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়।এক সময়ে ব্রিটিশদের দখলে আসে এ ভূখণ্ড। তখন বড় ধরনের ভুল করে তারা এবং এটা ইচ্ছাকৃত কিনা, সে প্রশ্ন জ্বলন্ত। তারা মিয়ানমারের ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর তালিকা প্রস্তুত করে। কিন্তু তার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এ ধরনের বহু ভূল করে গেছে ব্রিটিশ শাসকরা।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়। সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। রোহিঙ্গাদের জন্য শুরু হয় দুর্ভোগের নতুন অধ্যায়। সামরিক জান্তা তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ধর্মীয়ভাবেও অত্যাচার করা হতে থাকে। নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া হয়। হত্যা-ধর্ষণ হয়ে পড়ে নিয়মিত ঘটনা। সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়। বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করা হতে থাকে। তাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেই।

বিয়ে করার অনুমতি নেই। সন্তান হলে নিবন্ধন নেই। জাতিগত পরিচয় প্রকাশ করতে দেওয়া হয় না। সংখ্যা যাতে না বাড়ে, সে জন্য আরোপিত হয় একের পর এক বিধিনিষেধ।মিয়ানমারের মূল ভূখণ্ডের অনেকের কাছেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ‘কালা’ নামে পরিচিত। বাঙালিদেরও তারা ‘কালা’ বলে। ভারতীয়দেরও একই পরিচিতি। এ পরিচয়ে প্রকাশ পায় সীমাহীন ঘৃণা।

২০১৬-১৭ মায়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন বা নিপীড়ন বলতে মায়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশের দ্বারা দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর চলমান সামরিক অভিযানকে বুঝানো হয়। এটি ২০১২ সালের অক্টোবরে অজ্ঞাত বিদ্রোহীর দ্বারা বার্মা সীমান্তে হামলার একটি প্রতিক্রিয়া ছিল। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও শিশুহত্যাসহ অত্যধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মায়ানমার কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত হয়েছে।২০১৬-১৭ মায়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন তারিখ অক্টোবর ৯, ২০১৬ – বর্তমান অবস্থান রাখাইন  রাজ্য,  মায়ানমার কারণঅজ্ঞাত বিদ্রোহীর দ্বারা বার্মা সীমান্ত পুলিশ পোস্টে হামলা সরকারের দ্বারা রোহিঙ্গাদেরকে বহুদিন ধরে খারাপ আচরণ করা হয়েছ।

বৌদ্ধ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বিদ্যমান অংশগ্রহণকারী সামরিক শাসকদের হাতে বিস্তৃতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার
গণহারে বাস্তুচ্যুত বলপূর্বক স্থানান্তর  মৃত্য  ১,০০০+ছাড়িয়েছে।রোহিঙ্গা জনগণের ওপর সামরিক অভিযান জাতিসংঘ (যা “মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ” হিসেবে চিহ্নিত), মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট, প্রতিবেশী বাংলাদেশ সরকার এবং মালয়েশিয়ারসরকার থেকে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে ( যেখানে অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী পালিয়ে গেছে)। মায়ানমার সরকার প্রধান, অং সান সু চি, বিশেষ করে তার নিষ্ক্রিয়তা ও নীরবতার জন্য এবং এই সামরিক অপব্যবহার প্রতিরোধে বলতে গেলে কোন কাজ না করার জন্য সমালোচিত হয়েছেন।আমার মনে হয় ,শুধু আমার নয় আজ ২০১৭ সালে বিশ্বের অন্যতম নিংড়ানো, কলোষিত,বর্বরতার যঘন‍্য তম একটি নতুন ইতিহাস তৈরী করেছে ঐ মায়ানমার সরকার প্রধান ,অং সান সু চি,যাহা বিশ্বের কাছে এক বিষময় ইতিহাস হয়ে থাকবে।মুসলিম সম্প্রদায়ের উপরে এই নৃশংস হত‍্যা যঙ্ক পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিরল বলে ই বিভিন্ন ভাবে হিসেব করে বের করা হয়েছে।আমি মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, যে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে তোমার সৃষ্টির সেরা জীব বানিয়ে এই পৃথিবীর বুকে পাঠিয়েছো,তবে কেনোই তোমার সৃষ্টির সেরা জীব এই মুসলিম সম্প্রদায়ের উপরে এত বড় কষ্ট দেও?তুমিই তো রহমানের রাহিম, তুমি ইতো মোদের রব্বুল আলামিন,তুমি অবশ্যই তোমার সৃষ্টির সেরা জীব মূসলিমদের কে ঐ নরপিশাচ রোহিঙ্গাদের নিষ্ঠুরতা থেকে রক্ষা করবেন। হে আল্লাহ তুমি ই যে আমাদের রক্ষাকারী, তুমি ই যে আমাদের পালন কর্তা।আমাদের বিশ্বাস তুমি তোমার বান্দা দেরকে অবশ্যই রক্ষা করবে।আমিন।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET