ছাগলনাইয়া পৌরসভার প্যানেল-১ ও ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুন্সি নুর হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে
হকিস্টিক ও ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) ছাগলনাইয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তার বড় ভাই মুন্সি আবুল হোসেন।
অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়, গত শনিবার রাত আনুমানিক ৯ টা থেকে সাড় ১০ টার মাঝামাঝি সময়ে মোকামিয়া রাস্তার মাথায় কে বা কাহারা হত্যার উদ্দেশ্যে নুর হোসেনের উপর আক্রমণ করে। এতে তার মুখমণ্ডলে রক্তাক্ত জখম হয়।
এরআগে প্রকাশ হয়, গত শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার সময় প্যানেল মেয়র মুন্সি নুর হোসেন মোটরসাইকেল যোগে উপজেলার শুভপুর থেকে মোকামিয়া রাস্তার মাথা নামক স্থানে পৌছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পশ্চিম ছাগলনাইয়া গ্রামের পথচারী মোঃ শাহরিয়াজ তামিম (২০) নামক এক যুবকের শরীরের সাথে তার মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে যুবক রাস্তের পশ্চিম পাশে গাছের সাথে আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, শনিবার রাতে মোকামিয়া রাস্তার মাথায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে আহত শাহরিয়াজ তামিমের সাথে খুরশেদুর রহমান শুভ (১৩) নামক এক কিশোর উপস্থিত ছিলো।
(ছবিতে খুরশেদ আলম শুভ)
এ বিষয়ে শুভ জানান, সেদিন মোকামিয়ায় একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে আমি ও তামিম ভাইয়া দুজনে আলোক সজ্জার কাজে নিয়োজিত ছিলাম। রাত সাড়ে ১১ টায় আমরা বাড়ীতে আসার জন্য রাস্তার উপর গাড়ীর জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করি। গাড়ী না পাওয়াতে আমরা হাটতে শুরু করি। মোকামিয়া রাস্তার মাথা নামক স্থানে আসলে হঠাৎ পেছনের দিক থেকে একটি মোটরসাইকেল এসে তামিম ভাইয়াকে ধাক্কা দেয়। এতে তামিম ভাইয়া গাছের সাথে ধক্কা খায় এবং জ্ঞান হারিয়ে পেলে। একই সাথে মোটরসাইকেল আরোহী ব্যক্তিও রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখি। পরে শুভপুর থেকে মোটরসাইকেল যোগে কিছু লোক ঘটনাস্থল পর্যন্ত এসে পৌছলে তারাসহ আমি আহত দুইজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। শুভ আরো জানায়, ঠিক যে মুহুর্তে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হয় তখন আশপাশে অন্য কোন লোকজন ছিলোনা।
(ছবিতে শাহরিয়াজ তামিম)
অন্যদিকে এ ঘটনায় আহত যুবক তামিম জানান, সেদিন রাতে হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল আমাকে পেছনের দিক থেকে আঘাত করলে আমার বাম পায়ে মারাত্মক আঘাত লাগে। পরে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। মোটরসাইকেলে কে ছিলো সেটাও আমি দেখিনি।
ঘটনার দিন থেকে পরবর্তী দু’দিন বিষয়টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হলেও হঠাৎ বিভিন্ন মহলে বলাবলি করছে এটি হত্যা চেষ্টা। মুন্সি নুর হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ডাক্তার বলছে নুর হোসেনের শরীরে আঘাতের আলামত অনুযায়ী এটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছেনা। চিকিৎসকদের ধারনা তাকে আঘাত করা হয়েছে। ঘটনার দিন থেকে ছয় দিন পরও মুন্সি নুর হোসেনের জ্ঞান আসেনি বলে জানায় তার স্বজনরা। বর্তমানে সে রাজধানী ঢাকার গ্রীন লাইফ হাসপাতালে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কা জনক বলেও জানাগেছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে ছাগলনাইয়া থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, নুর হোসেনের বড় ভাই বাদি হয়ে আসামি অজ্ঞাত নামা উল্লেখ করে এজাহার পেশ করেছে। লিখিত অভিযোগ পেয়ে আমরা সাথে সাথে মামলা রুজু করেছি। তিনি বলেন, আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি এবং আশা করছি দ্রুত প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।