নয়া আলো ডেস্ক- গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, এদেশে কোনো বিচার না হলেও অবিচার চলছে সমান তালে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আইনের শাসনের প্রতি চপেটাঘাত ছাড়া কিছুই নয়। অবিচার দিয়ে কোনোদিনই সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়- এই সত্যটুকু বুঝতে আমাদের যতো দেরি হবে আমরা ততো পেছনের দিকেই যেতে থাকবো। আইনের শাসন থেকেও আরো দূরে যেতে থাকবো। হ্যাঁ, একজন শিবির নেতাকে হত্যা (?) করা হয়েছে বলে আমি জানি আপনারা অনেকেই হয়তো খুশি হয়েছেন। আমি এও জানি এই হত্যার নিশানা হয়তো আপনার/আমার দিকেও তাক করা আছে। আপনাকে কিংবা আমাকে হত্যার পরও খুনিরা কাউকে না কাউকে ঠিকই খুঁজে নেবে, যারা বৈধতা দেবে আমাদের হত্যার। আমি গভীরভাবে শঙ্কিত, তাই সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধেই উচ্চকিত। সংগঠন হিসেবে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে সম্ভবত সবচেয়ে সোচ্চারদের আমি একজন। বিচারের দাবি মানে যদি কেউ অবিচারের দাবি মনে করে থাকেন, আমার প্রতি খুব অন্যায় করা হবে। বিচার মানে আইনপ্রয়োগের মাধ্যমে ন্যায়বিচার। আমি জামায়াত-শিবিরের আদর্শিক বিরোধী, কিন্তু তাদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার সমর্থক নই। অপরাধীর অপরাধের বিচার হবে দেশের আইন অনুসারে, তার যদি সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাপ্য হয় তবে সে তাই পাবে। কিন্তু বিচার না করে বিচারবহির্ভূতভাবে তাকে হত্যা করা হলে এটা তার প্রতি যেমন অবিচার, বিচারপ্রত্যাশীদের প্রতিও অবিচার। কেউ কেউ বলবেন তারা তো দেশবিরোধী, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তাদের আবার বিচার কিসের? দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তিও কিন্তু দেশের আইনে সম্ভব। তাকে সেই আইন অনুসারে শাস্তি দেয়ার বদলে গুম বা খুন করা হলে সেটা দেশের আইনের প্রতিও অসম্মান। আমি মানবতাবিরোধী অপরাধী ও খুনি-ধর্ষকদের বিচার চাই। এই জঘন্য অপরাধীদের ক্ষেত্রেও কখনও অবিচার চাইনি।
কেননা আমি বিশ্বাস করি, অবিচারকে প্রশ্রয়ই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায়। অবিচার দিয়ে কোনোদিনই সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। সকল হত্যা-গুম-খুন-ধর্ষণের বিচার চাই। এমনকি যদি বিচারবহির্ভূতভাবেও কাউকে হত্যা করা হয় তার বিচার চাই। (আমি জানি, আমি যা বলছি তার জন্য এই সমাজ এখনও প্রস্তুত নয়। তারপরও বলছি, কারণ ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বার্থে কাউকে না কাউকে তো ঝুঁকি নিতেই হবে। আমি ঝুঁকি নিতে পছন্দ করি।)