
নয়া আলো ডেস্ক-
ক্ষুধার তীব্র যন্ত্রণা সইতে না পেরে ডাস্টবিনে পড়ে থাকা ককুরের গলিত লাশ খেয়ে ফেলেছে কয়েকজন শিশু।
উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডের মুকদাহান নামক অঞ্চলে এ ঘটনা ঘটে। কুকুরের লাশ খাওয়ার পর তারা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডের মুকদাহান নামক অঞ্চলে দারিদ্রতা চরম আকার ধারণ করেছে। ফুটপাতে থাকা শিশুরা ঠিক মত খাবারই পাচ্ছে না। আর ভিক্ষা করতে গেলে কেউ তাদের ভিক্ষাও দিচ্ছে না। ফলে রাস্তায় কোনো উচ্ছিষ্ট খাবার পেলেই তা খেয়ে ক্ষুধার জ্বালা নিবারণ করে তারা।
গত ২৬ অক্টোবর ১০-১২ জন শিশু কুকুরের কয়েকটি গলিত মরদেহ দেখতে পায়। তা দেখে তারা সিদ্ধান্ত নেয় এ কুকুরের মাংস রান্না করে ভিক্ষা করে আনা ভাত দিয়ে খাবে। তাই তারা ফুটপাতে মরদেহগুলো রান্না করে খায়। কিন্তু এ বিষাক্ত খাবার তাদের পাকস্থলীতে হজম হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন রাস্তার এক ঝাড়ুদার শিশুগুলোকে নিয়ে এলাকার সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
টনাটি ঘটেছে উত্তর পূর্ব থাইল্যান্ডের মুকদাহান নামক অঞ্চলে। বর্তমানে সেখানে চরম দারিদ্রতা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে চন চাইপ্রাসিট নামের এক প্রাণি কল্যাণ অফিসার বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। শিশুগুলো যে কুকুরের মরদেহ খাবে তা কেউ ভাবতে পারেনি। মরদেহ খেয়ে শিশুগুলো এখন জলাতঙ্কে আক্রান্ত। তাদের জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়েছে।’
গত সোমবার কয়েকটি কুকুর মানুষকে হামলা করেছিল। তাই নিরাপত্তা কর্মী কয়েকটি কুকুরকে মেরে তাদের মাথাগুলো আলাদা করে ডাস্টবিনে ফেলে রেখেছিল। তার দুই দিন পর ক্ষুধার্ত শিশুরা সেগুলো নিয়ে গিয়ে রান্না করে খায়।
চন বলেন, ‘অনেকে বলছে শিশুরা কেন মরদেহগুলো খেতে গেল। কিন্তু তারা হয়তো জানে না, ক্ষুধার জ্বালা কতটা ভয়াবহ। তারা অবশ্যই ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরেই মরদেহগুলো খেয়েছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা করতে পারব।’
এ অঞ্চলে শুধু মানু্ষই ক্ষুধার্ত থাকে না, মানুষের মত রাস্তার কুকুরও ক্ষুধার্ত থাকে। ক্ষুধার জ্বালায় তারাও একে অপরকে কামড়াকামড়ি করে।
ইথায়া থংমাহা নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘প্রতিদিন অনেক কুকুর একে অপরকে কামড়াকামড়ি করছে। অসহ্য উৎপাতও শুরু করেছে। আমরা খুব ভয়ে আছি। হয়তো আমাদের উপরও হামলা করতে পারে কুকুরগুলো।’
শিশুগুলোর কুকুরের মরদেহ রান্না করে খাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে দেখিনি তবে জানতে পেরেছি সেই শিশুগুলো অন্তত দশটি কুকুরের দশটি মরদেহ নিয়ে টানাটানি করছিল। হয়তো সেগুলোই তারা রান্না করে খেয়েছে।’