
সাইফুল আলম সুমন,শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ- গাজীপুরের শ্রীপুরে আলোচিত সেই স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন মুন্নি(২৪) হত্যার ঘটনার সাতদিন পর প্রধান আসামী স্বামী মোশারফ হোসেন সিয়ামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৩এপ্রিল) দিবাগত রাতে দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের তার দু’সম্পর্কের মামা আনিছুর রহমানের বাড়ী থেকে তাকে গ্রেফতার করে শ্রীপুর থানা পুলিশ।
গ্রেফতার হবার পর পুলিশের কাছে স্ত্রী হত্যার ঘটনার সাবলীল বর্ণনা দেন সিয়াম, সিয়াম ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন মনোয়ারা পারভিন মুন্নিকে, কিন্তু বিয়ের পাঁচ মাসের মধ্যেই স্ত্রী জড়িয়ে পড়েন পরকিয়ায়। আর স্বামী সিয়াম এটা মেনে নিতে পারেনি, তাই সিদ্ধান্ত নেন, স্ত্রীকে পৃৃথিবী হতে সরিয়ে দিবেন। আর এ কাজে তিনি সাহস পান ভারতীয় সনি আটে প্রচারিত ক্রাইম পেট্রোল দেখে। মুন্নিকে কয়েকবার হত্যার পরিকল্পনা করেন সিয়াম, কিন্তু সফল হননি, অবশেষে ৫ এপ্রিল রাতে হত্যার প্রস্ততি নেন কিন্তু তাঁর স্ত্রী ঘুমিয়ে যাওয়ায় হত্যা করতে পারেননি, অত:পর ৬ এপ্রিল সকাল সাতটায় স্ত্রী ঘুম থেকে জেগে উঠলে ভালবাসার পরশে ভুলিয়ে দৈহিক মিলন করেন স্ত্রীর সাথে, পরে সকাল ৯টার দিকে ঠান্ডা মাথায় শুরু হয় তার আসল কাজ। প্রথমে তাকে পেটে ছুড়িকাঘাত করা হয় কিন্তু তা বিফলে গিয়ে লাগে ডান হাতে কিছুক্ষন উভয়ের মধ্যে দস্তাদস্তি হওয়ার পর গলায় চালিয়ে দেয় ছুড়ি আর সাথে সাথেই ঢলে পড়েন মুন্নি। উভয়ের মধ্যে প্রায় দশ মিনিট ধরে চলা এই হত্যা লীলার শব্দ। মুন্নি বাঁচার জন্য স্বশব্দে আকুতি থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। সবাই মনে করেছেন প্রতিদিনের মতই তাদের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছে। সে আরো জানায়, হত্যার পর বাথরুমে গিয়ে তাঁর রক্ত মাখা পোশাক পরিবর্তন করে শশুড়ের পোশাক পড়ে বাড়ি থেকে গোপনে বের হয়ে যায়। পরে সেখান থেকে প্রথমে ময়মনসিংহ, বান্দরবন, বগুড়ার, এরপর দিনাজপুরে গেলে পুলিশের জালে আটকে যান।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান জানান, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে বগুড়া ও পরে দিনাজপুরের মাগুরা থানা পুলিশের সহযোগীতায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিয়াম পুলিশের কাছে স্ত্রী মনোয়ারাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ ঘাতক মোশারফ হোসেনকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
উল্লেখ্য গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টায় শ্রীপুর পৌরসভার প্রশিকা মোড় এলাকার বাবা মনির হোসেনের বাড়ীতে মনোয়ারা পারভীন মুন্নিকে স্বামী জবাই করে হত্যা করে। এ ঘটনার পর স্বামী মোশারফ হোসেন সিয়াম ওরফে শুভ ঘরের পেছনের জানালা ভেঙ্গে পালিয়ে যায়।