সাইফুল আলম সুমন,শ্রীপুর(গাজীপুর)প্রতিনিধিঃ- কুসুম মালাকে (হাতি) পোষ মানাতে গিয়ে বহুবার মৃত্যুর মুখে পড়েছেন মাহুত আবু তাহের। হাতির আক্রমণে বুকের পাঁজরও ভেঙে গেছে তার। তবুও ছাড়তে পারেননি হাতির প্রতি ভালোবাসা। কুসুম মালাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে আসা দর্শনার্থীদের আনন্দ দেন তিনি। তবে আবু তাহেরের জীবনের আনন্দটা খানিকটা ম্লান। শুধু তিনি নন, তার মতো আরও তিনজন গত ১৩ মাস ধরে তার বেতন ভাতা পান না। ফলে পরিবার নিয়ে বিপাকে আছেন তারা।
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের প্রতিষ্ঠালগ্ন ২০১৩ সালে ছয়টি হাতি আনা হয়। ছয়টি হাতির জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় ছয়জন মাহুতকে (পরিচালনাকারী)। তবে এদের মধ্যে দুইজনের বেতন ভাতা সাফারী পার্ক প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও বাকি চারজনকে আউটসোর্সিং হিসেবে নেওয়া হয়। কিছুদিন সামান্য বেতন ভাতা দেওয়া হলেও ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। ১৩ মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় মাহুত আবু তাহের, সাধন, পুনসেন, বিনোদ পরিবার নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
মাহুত সাধন চাকমা জানান, পাহাড়ি এলাকায় তাদের বাড়ি হওয়ায় ছোটকাল থেকেই নানাভাবে যুদ্ধ করে তাদের টিকে থাকতে হয়। অনেক সময় পূর্বপুরুষের মাহুতের পেশা ধরে রাখতেই তারা এ পেশায় নামেন। হাতির বয়স যখন তিন বছর হয় তখন তাকে প্রশিক্ষকের সাহায্যে তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যার পুরোটাই তত্ত্বাবধান করেন মাহুতরা। এমনিভাবে বিশেষ প্রশিক্ষণের সাহায্যে তাকে গড়ে তোলা হয়। এসময় হাতিটি মাহুতের অধীন হয়ে যায়। তবে হাতি নির্দিষ্ট মাহুত ছাড়া অন্যের হুকুম পালন করতে রাজি নয়।
মাহুত পুনসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ আয়ের পথ বন্ধ হওয়ার পরও শ্রম থেমে থাকেনি। প্রতিদিন হাতির পরিচর্যাসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়। বেতন-ভাতার অভাবে এখন পুরো পরিবার নিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন জানান, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট জটিলতায় চার মাহুতের বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে এ প্রকল্প রাজস্ব খাতে যাওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে চলে গেলেই তারা বেতন ভাতা পাবে।