সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:- সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় মাহফুজা খাতুন (৩০) এক গৃহবধূকে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। পলাতক রয়েছে ওই গৃহবধূর স্বামীসহ নির্যাতনকারী অন্যান্যরা।
বর্তমানে ওই গৃহবধূ কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এর আগে শনিবার বিকালে উপজেলার আড়ংগাছা গ্রামে গাছের সাথে বেঁধে তার উপর নির্যাতন চালায় স্বামীসহ শ^শুর বাড়ির লোকজন। নির্যাতিত গৃহবধূ ওই গ্রামের অহিদুল্লাহ গাজীর স্ত্রী।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, অহিদুল্লাহ গাজীর বোন মাছুমা বেগম (৩০) ও তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী মর্জিনা বেগম (২৫)।
নির্যাতিত গৃহবধূর বড় ভাই বাবলুর রহমান মোল্যা জানান, ২০০৪ সালে তার বোনের সাথে কালিগঞ্জ উপজেলার আড়ংগাছা গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহ গাজীর ছেলে অহিদুল্লাহ গাজীর সাথে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তাহশিয়া খাতুন (১২) ও তুন্নি খাতুন (৮) নামে দুটি মেয়ে রয়েছে। সম্প্রতি মাহফুজা ও অহিদুল্লাহর মধ্যে গোলযোগ হয়।
এর জের ধরে মাহফুজা শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ হাজিপুর গ্রামে বাবার বাড়ি চলে আসে। এই সুযোগে অহিদুল্লহ মাহফুজাকে একটি ভুয়া তালাকনামা পাঠায় এবং তার বড় মেয়ে তাওছিয়া খাতুনকে ঘরে আটকে রাখে। এ খবর জানতে পেরে মাহফুজা মেয়েকে দেখতে ও তালাকের বিষয়টি জানতে শনিবার বিকেলে শ্বশুর বাড়িতে যায়।
এ সময় অহিদুল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে মাহফুজাকে গাছের সাথে বেধে মধ্যযুগীয় কায়দায় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে মাহফুজা মারা গেছে ভেবে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় তারা।
পরে স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে সে সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুবির দত্ত জানান, এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূর ছোট ভাই লাভলু মোল্লা বাদী হয়ে মাহফুজার স্বামী অহিদুল্লাহসহ তার পরিবারের সাতজনের নামে একটি মামলা দায়ের করেছে। ইতোমধ্যে দুইজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।