নয়া আলো ডেস্কঃ- সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিবন্ধীরা সংরক্ষিত বেড, থেরাপি ও বিনামূল্যে ঔষধ সেবা পাচ্ছে। এতে প্রতিবন্ধীরা সেবা গ্রহন করে তাদের প্রতিবন্ধীতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হচ্ছে।
এরই লক্ষ্যে হাসপাতালে দুটি প্রতিবন্ধী বান্ধব র্যাম্প, একটি টয়লেট মডিফিকেশন করা হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য ইনডোরে নারী ও পুরুষদের জন্য দুই ওয়াডে ২সংরক্ষিত বেড বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা ব্যবহার হচ্ছে।
আউটডোরে টিকিট কাউন্টার ডাক্তারদের চেম্বার, ইমারজেন্সিতে, ঔষধ বিতরণ কাউন্টারে প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
এছাড়া প্রতিবন্ধী বান্ধব হাসপাতাল করার জন্য ম্যাসেজ সম্বিলিত দেওয়াল লিখণ করা হয়েছে।
হাসপাতালের টেলিমেডিসিন ইউনিটের মাধ্যমে খিঁচুনী, অটিষ্টিক, মেন্টাল সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ঢাকা পঙ্গু হাসপাতাল, মানসিক হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ অনেক বিশেষায়িত হাসপাতাল থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে। যার ফলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অর্থ, সময় ও শ্রম ব্যয় করে জেলা, বিভাগ রাজধানীতে যেতে হচ্ছে না।
সব ধরনের চিকিৎসা সেবা উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্স থেকে পাওয়ার সুযোগ তৈরী করছে একীভূত চিকিৎসা সেবা প্রদানে হাসপাতালটি অনুকরনীয় হয়ে উঠেছে।
সফলাতার পিছনে সরকারী ও প্রকল্প কর্মকর্তা সেবাদান কর্মী, প্রতিবন্ধী সংগঠন নারী কন্ঠ উন্নয়ন সংস্থা সহ প্রকল্পের সাথে জড়িত সকল স্টেকহোল্ডার এক সাথে কাজ করায় এটি সম্ভব হয়েছে। জেলায় ডিআর আরএ নামের একটি প্রতিবন্ধী উন্নযন সংস্থা একীভূত স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসন সেবা সম্প্রসারণ (পিআইএইচআরএস) প্রকল্পের মাধ্যমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ২০১৭ নাম্বার কক্ষে, দেবহাটা উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্স ১০৪ নাম্বার কক্ষে, আশাশুনি উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্স ১০৫ নাম্বার কক্ষে সেবা কার্যাক্রম পরিচালনা করে আসছে।
সাতক্ষীরা সদর আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার সকল কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে রেফারাল ও পরামর্শ সেবা প্রদান করা করা হয়।
এছাড়া ডিআর আরএ আরো ১৯টি জেলায় সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সেবা ও পুনর্বাসনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। ২০১৫ সালের জানুয়ারী থেকে ২০১৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার থেকে সেবা গ্রহণকারী ২৩৫৪ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মধ্যে নারী ৫২০, পুরুষ ৭১০, বালিকা ৪৬৫, বালক ৬৬০ জন। প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা রোগীর সংখ্যা নারী ৮৩৩, পুরুষ ৯৪৯, বালিকা ৪৬, বালক ৮৮ জনসহ মোট ১৯১৬ জন। সর্বমোট সেবা গ্রহীতা ৪২৭০ জন ১৯১৬৯ বার ফিজও ও অকুপেশনাল থেরাপি, জেনারেল হেল্থ সেবা গ্রহণ করেছে।
২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত থেরাপি সেবা গ্রহন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে ১৩৭ জন। এছাড়া ফিজিও ও অকুপেশনাল থেরাপি সেবা, সহায়ক উপকরন প্রদান এবং ব্যবহারের উপর প্রশিক্ষন, মেডিসন প্রদান (অটিজম, খিচুনি ও মানসিক রোগীদের), সার্জারী সেবা, কাউন্সেলিং সেবা, রেফারাল সেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা সেবা, কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষন প্রদান, মেডিসিন প্রাপ্ত শিশুদের নিয়মিত ফলোআপ সেবা, বাড়ীতে সহায়ক উপকরন ব্যবহার উপযোগী পরিবেশ তৈরি, জরুরী ভিত্তিতে স্থানীয় উপকরন (বাশ, কাঠ) দিয়ে রোগীর বাড়ীতে সহায়ক উপকরন তৈরি করে দেওয়া কর্মকান্ড চলমান রয়েছে।
প্রতিবন্ধীরা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি থেরাপি ও ঔষধ সেবা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। সেই সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারি ভাবে দেশের প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিবন্ধীদের জন্য সেবার মান আরো বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তাদের স্বজনরা।