ধর্ম নিয়ে কটূক্তির বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ হাজির উদ্দেশ্যে ডাকা নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অনুরোধে এ সংবাদ সম্মেলন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে বলে আজ রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন সেলিম ওসমান। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ওই সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল।
জাতীয় পার্টির নির্বাহী কমিটির অনুমতি পেলে পরে এ সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলেও জানানো হয় ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
দুই দিন আগে সেলিম ওসমান জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনার দিন ‘আসলে কী ঘটেছিল তার তথ্য-প্রমাণ’ হাজির করবেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবারও নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সেলিম ওসমান। সেখানে তিনি দাবি করেন, শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন। জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি স্বেচ্ছায় কান ধরে ওঠবস করেছেন। এ ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ আছে বলেও তিনি দাবি করেন।
ওই দিন তিনি দাবি করেন, শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন। জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি স্বেচ্ছায় কান ধরে ওঠবস করেছেন। এ ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ আছে বলেও দাবি করেন সেলিম ওসমান।
সেলিম ওসমানের অভিযোগ শুনে ওই দিন শ্যামল কান্তি প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি ইসলাম ধর্মকে নিয়ে কটূক্তির বিষয়টি অস্বীকার করেন।
নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে শুয়ে শ্যামল কান্তি জানান, সেদিন সেলিম ওসমান তার দুই গালে দুটি করে চারটি চড় মারেন। এরপর বলেন, শালা কান ধর। ইসলাম ধর্ম নিয়ে কোনো কটূক্তি করেননি তিনি। সেদিনের পুরো ঘটনাই ছিল সাজানো।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে গত ১৩ মে শ্যামল কান্তি ভক্তকে কানধরে উঠবস করানো হয়।
শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৮ মে স্কুলের এক ছাত্র মারধরের সময় আল্লাহ-রাসুলের নাম মুখে নিলে তিনি ধর্ম নিয়ে কটূ কথা বলেন। পরে নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রের মা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করলে শুক্রবার এ বিষয়ে স্কুলে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকের সময় ধর্ম নিয়ে কটূক্তির বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়। তারা শিক্ষককে মারধর করে অবরুদ্ধ করে রাখে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে ব্যর্থ হলে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানকে খবর দেয়া হয়। তিনি সেখানে গিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে বলেন। ওই সময় শ্যামল কুমার ভক্ত প্রকাশ্যে কানে ধরে ওঠ-বস করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সেলিম ওসমান বলছেন, অভিযোগের সত্যতা মেলার পর ওই শিক্ষককে জনরোষ থেকে বাঁচাতে এভাবে মাফ চাওয়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।