স্বাধীনতার জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪৬৭৫ দিন কারাগারে ছিলেন। আর তাই স্বাধীনতা যিনি নিয়ে এসেছেন নির্মমতার রক্তচক্ষুকে ভয় না পেয়ে; তাঁরই পথ ধরে নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক-শিক্ষা-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মী হিসেবে বরাবরই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য নিবেদিত থেকেছি সবসময়। আজ যখন স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও জামায়াতে ইসলামের ইসলামী ব্যাংকের নাম পরিবর্তনে ব্যর্থ তাঁরই আদর্শে গড়া রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার; তখন কেবলই চোখের পাতায় ভেসে ওঠে বরেণ্য কলামিস্ট সোহরাব হাসান-এর লেখা- তরুণ শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছিলেন, এ কথা সত্য। কিন্তু তার চেয়ে বেশি সত্য, দেশটির ২৪ বছরের ইতিহাসে কখনোই তিনি নিজেকে পাকিস্তান রাষ্ট্রকাঠামোয় প্রতিস্থাপন করেননি। কলকাতায় প্রগতিশীল মুসলিম তরুণদের নিয়ে যে ইনার সার্কেল গঠিত হয়েছিল, তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। এই সার্কেলের প্রধান সংগঠক মোয়াজ্জেম চৌধুরীর সহায়তায়ই ১৯৬৩ সালে বঙ্গবন্ধু আগরতলা গিয়েছিলেন স্বাধীনতাসংগ্রামে ভারতের সহায়তা পাওয়ার আশায়। কিন্তু দিল্লির সঙ্গে যাঁকে যোগাযোগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তিনি সেটি করতে না পারায় বঙ্গবন্ধুকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসতে হয়। মোয়াজ্জেম চৌধুরী এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘শেখ মুজিব যে এত বড় নেতা হলেন, এটার মূল কারণ হচ্ছে যে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সঙ্গে তিনি কখনো আপস করেননি। অন্যদিকে অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেও তিনি গণতান্ত্রিক সংগ্রামে নির্ভীক ছিলেন এবং সেটার জন্যই পাকিস্তানের এক নম্বর লিডার হয়ে গেলেন।’
ইতিহাস বলে যে, প্রকৃত প্রস্তাবে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলার সেদিনই বিচ্ছেদ ঘটল, যেদিন পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় ঘোষণা করলেন, ‘উর্দু এবং উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।’ সূচনালগ্ন থেকে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর বৈরী, বিদ্বেষপূর্ণ ও বৈষম্যমূলক নীতি বাঙালির স্বশাসনের দাবিকে আরও শাণিত করে। বঙ্গবন্ধু তখনই মোটামুটি বুঝে গেছেন, ‘ওদের সঙ্গে থাকা যাবে না।’ কেননা ওদের ভাষা, সংস্কৃতি, চেহারা—কিছুতেই বাঙালি বা এ দেশের মানুষের সঙ্গে মিল নেই। শেখ মুজিবই এ দেশে প্রথম রাজনীতিকে সাধারণ মানুষ তথা গ্রামের মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁর উদ্দীপনাময় ও আবেগময় বক্তৃতা সব শ্রেণি ও পেশার মানুষকে মুগ্ধ ও প্রাণিত করত। নবাব-অভিজাত শ্রেণি যাদের তুচ্ছ–তাচ্ছিল্য করত, তিনিই তাদের নেতা হলেন, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক প্রথম কৃষকের অধিকার নিয়ে রাজনীতি করলেও তাঁর মধ্যে একটি দোলাচল কাজ করত। কিন্তু শেখের বেটা হয়ে উঠলেন সত্যিকারের গণমানুষের নেতা। প্রিয় দেশবাসীর বিপরীতে তাঁর ‘ভায়েরা আমার’ ও ‘বোনেরা আমার’ শব্দবন্ধ গোটা জনগোষ্ঠীকে আন্দোলিত করেছিল।
বাংলাদেশে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক-শিক্ষা-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মী হিসেবে বিন¤্র শ্রদ্ধায় কাজ করে চলেছি সেই ‘ভায়েরা আমার’ ও ‘বোনেরা আমার’ শব্দবন্ধকে কাজে লাগিয়ে। কেননা, আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর অসাম্পত কাজ যদি তাঁর কন্যা শেখ হাসিনাই সমাপ্ত করবেন ভেবে বসে থাকি, তাহলে আগামী শত বছরেও আর তা সম্ভব হবে না। বরং সেই সাথে তারুণ্যের রাজনীতিক-শিক্ষা-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে দেশকে ভালোবেসে। আর সেই ভালোবাসাকে কাজে লাগাতে তৈরি হয়ে এগিয়ে চলছি ময়মনসিংহ থেকে মাসকাটা বিধৌত মেহেন্দীগঞ্জ; সেখান থেকে বরিশাল; এরপর কীর্ত্তনখোলার তীর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; এরপর জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরিতে তোপখানা রোডের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে সারাদেশে। নতুনধারা বাংলাদেশ-এনডিবির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন করেছি ৪২ জেলা, ১০২ উপজেলা কমিটি সহ ১৫৬ টি শাখার নেতাকর্মীদের স্বাক্ষর; কার্যালয়; ট্রেজারারি চালানের কপি; ব্যাংক একাউন্ট; আয়ের উৎস; বিধিমালা-ইশতেহার সহ সকল শর্ত পূরণের মধ্য দিয়ে। আর একারনেই স্বাধীনতার মাসে সারা শরীরে দাহ শরু হয়ে যায় আমাদের স্বাধীনতা-স্বাধীকার বিরোধী চক্রের। ওৎ পেতে থাকে কখন আমাকে, নতুনধারাকে শেষ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র ছুড়ে দেবে। অবশেষে স্বাধীনতার মাসের ১৫ তারিখ তারা বেছে নেয় সেগুন বাগিচাকে। সেদিন রাতে আমার সহধর্মিনী নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক-শিক্ষা-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মী শান্তা ফারজানাকে বাসায় দিয়ে অফিসে ফেরার পথে সামনে এসে দাঁড়ায় স্বাধীনতা বিরোধী জঙ্গীচক্র। এরপর নিজেকে আবিষ্কার করি অন্য কোথাও। ৩ বার শুনেছি ফজরের আজান। ভেবেছি ৩ দিন। এই সময়ে এরা ‘র’ না ‘ মোসাদ’ কার টাকায় চলি? আস্তিক না নাস্তিক পরীক্ষা করতে সুরা ফাতিহা পারি কি না? ধর্ম বিরোধী কাজে যুক্ত কি না? সরকারের টাকায় চলি কি না? সহ অনেক প্রশ্ন করে আর নির্মম মানষিক-শারিরীক নির্যাতন চালায়। এমন কি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ভালোবেসে দীর্ঘ ২২ বছরের প্রিয় বাবরী দোলানো চুল ফেলে দেয়। এই যদি হয় স্বাধীনতার ৪৭ বছরে দেশের অবস্থা! তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই স্মরণ করতে হবে যে, ষাটের দশকে শুরুতে নিষিদ্ধঘোষিত কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মণি সিংহ ও খোকা রায়ের সঙ্গে শেখ মুজিবের একটি বৈঠক হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করা। আলোচনার একপর্যায়ে মুজিব বললেন, দাদা, গণতন্ত্র-স্বায়ত্তশাসন এসব কিছুই পাঞ্জাবিরা দেবে না। কাজেই স্বাধীনতা ছাড়া বাংলার মুক্তি নেই। কমিউনিস্ট পার্টির দুই নেতা তাঁকে বোঝাচ্ছিলেন, স্বাধীনতার জন্য তো মানুষকে আগে প্রস্তুত করতে হবে। তখন মুজিব বললেন, আপনাদের কথা এখন মানলাম, কিন্তু স্বাধীনতাই আমার চূড়ান্ত লক্ষ্য। শেখ মুজিব বাঙালির মুক্তির সনদ বলে পরিচিত ছয় দফা কর্মসূচি এমন সময়ে ঘোষণা করলেন, যখন বাঙালিদের মধ্যে পাকিস্তানি শাসকবর্গ সম্পর্কে প্রচণ্ড বিরূপ ধারণা জন্ম নিয়েছিল, ১৯৬৫ সালে ১৩ দিনের যুদ্ধে তারা পূর্ববাংলাকে অরক্ষিত রেখে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েই ব্যস্ত ছিল। আবার যখন চরম বামেরা সত্তরের নির্বাচন বর্জন করে এক পাকিস্তান কাঠামোয় জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব করার চিন্তা করছিল, বঙ্গবন্ধু নির্বাচনকে নিলেন তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার পক্ষে গণভোট হিসেবে। আর ব্যালটে তিনি এমন অভাবিত বিজয় অর্জন করলেন যখন পাকিস্তানিদের বুলেট, ট্যাংক, কামান—সবই তুচ্ছ হয়ে গিয়েছিল। যে চক্র বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চাননি বলে ফালতু বিতর্ক করেন, তাঁদের ইতিহাসজ্ঞান সম্পর্কে সন্দেহ না করে পারা যায় না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে সীমিত নয়, বলা যায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই স্বাধীনতার নতুন সংগ্রামের শুরু। আর স্বাধীনতার এই স্পৃহা বাঙালি মানসে শেখ মুজিব এমনভাবে প্রোথিত করেছিলেন যে যেদিন ইয়াহিয়া খান পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করলেন, সেদিনই বাংলাদেশে পাকিস্তানিরা কর্তৃত্ব হারাল; বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হলো গণরাজ অথবা জনগণের শাসন। আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার আগে তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব নিজের হাতে নিয়ে নিলেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চেয়েছেন, কিন্তু যুদ্ধ চাননি। যুদ্ধটা পাকিস্তানিরাই চাপিয়ে দিয়েছে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তৎকালীন পাকিস্তান, বিশেষ করে পূর্ববাংলার রাজনীতিতে যেসব উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে, তার প্রধান পুরুষ ছিলেন শেখ মুজিবই। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন যখন পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়, তখন তিনি কারাগারে, কিন্তু দল গড়ার প্রস্তুতিটি আগেই নিয়ে রেখেছিলেন। এমন সতর্ক যে নেতা ছিলেন. সে নেতার দেশে সাহসের সাথে এগিয়ে যেতে যেতে আমি অন্তত মনে রেখেছি যে. জাকিতর জনক জীবনের ৪ হাজার ৬৮২ দিন কেটেছে কারাগারে। এর মধ্যে স্কুলের ছাত্র অবস্থায় ব্রিটিশ আমলে ৭ দিন কারাভোগ করেন। বাকি ৪ হাজার ৬৭৫ দিন তিনি কারাভোগ করেন পাকিস্তান সরকারের আমলে। তিনি ১৯৩৮ সালে প্রথম কারাগারে যান। এরপর ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত তিনি ৫ দিন কারাগারে ছিলেন। একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আটক হয়ে মুক্তি পান ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি। এ দফায় তিনি ১৩২ দিন কারাভোগ করেন। এরপর ১৯৪৯ সালের ১৯ এপ্রিল আবারও কারাগারে গিয়ে ৮০ দিন কারাভোগ করে মুক্তি পান ২৮ জুন। ওই দফায় তিনি ২৭ দিন কারাভোগ করেন। একই বছরের ১৯৪৯ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬৩ দিন এবং ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি টানা ৭৮৭ দিন কারাগারে ছিলেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পরও বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে যেতে হয়। সে সময়ে বঙ্গবন্ধু ২০৬ দিন কারাভোগ করেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক আইন জারির পর বঙ্গবন্ধু ১১ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন। এ সময়ে টানা ১ হাজার ১৫৩ দিন তাঁকে কারাগারে কাটাতে হয়। এরপর ১৯৬২ সালের ৬ জানুয়ারি আবারও গ্রেপ্তার হয়ে মুক্তি পান ওই বছরের ১৮ জুন। এ দফায় তিনি কারাভোগ করেন ১৫৮ দিন। এরপর ’৬৪ ও ’৬৫ সালে বিভিন্ন মেয়াদে তিনি ৬৬৫ দিন কারাগারে ছিলেন। ছয় দফা দেওয়ার পর বিভিন্ন মেয়াদে ৯০ দিন কারাভোগ করেন। এরপর ১৯৬৬ সালের ৮ মে আবারও গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তি পান। এ সময় তিনি ১ হাজার ২১ দিন কারাগারে ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই পাকিস্তান সরকার তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ দফায় তিনি কারাগারে ছিলেন ২৮৮ দিন। আর এ কারণেই দীর্ঘ ছয় দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির কেন্দ্রীয় চরিত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জীবদ্দশায় তো বটেই, মৃত্যুর পরও তাঁকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে আমাদের রাজনীতি। জীবিতকালে তিনি এ দেশের জনমানসে যে জায়গা করে নিয়েছিলেন, মৃত্যুর ৪২ বছর পর তা আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। যাঁরা একসময় তাঁর বিরোধিতা করতেন, তাঁরাও এখন জাতীয়তা ও স্বাধীনতা বিনির্মাণে তাঁর ভূমিকার কথা স্বীকার করেন। সমসাময়িক রাজনীতিকেরা যেখানে বারবার নীতি পরিবর্তন করেছেন, তাত্ত্বিক বিতর্কে দলকে বিখণ্ডিত করেছেন, সে সময়ে শেখ মুজিব জীবন-মৃত্যু পায়ের ভৃত্যজ্ঞান করে বাঙালিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছেন, পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামকে করে তুলেছেন অনিবার্য। রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন রাষ্ট্রনায়ক। তাঁর অসহযোগও মহাত্মা গান্ধী বা মার্টিন লুথার কিংয়ের মতো নিছক প্রতিবাদ-আন্দোলন ছিল না; ছিল পাকিস্তানি রাষ্ট্রকাঠামো এবং শাসনের বিরুদ্ধে একটি সফল ও বিকল্প শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। তা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন থেকে সরে এসে স্বাধীনতা রক্ষার নামে আখের গোছানোর রাস্তা তৈরি করছে বিধায়-ই আজ যখন তখন, যে কাউকে গুম হতে হচ্ছে, খুন হতে হচ্ছে, অপহরণ হতে হচ্ছে। এর উপর আছে আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাক স্বাধীনতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণর সম্ভাবনা। আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য নিরন্তর আন্দোলন বায়ান্ন থেকে। শিল্পী গেয়েছেন- ওরা আমার মায়ের ভাষা কাইড়া নিতে চায়; ওরা কথায় কথায় ছিকল পড়ায় আমার হাতে পায়। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও যদি ‘মানহানি, প্রতারণা, গুপ্তচরবৃত্তিসহ উদ্ধৃত বিবিধ বিষয়ের অপব্যাখ্যা ও অপব্যবহারের ব্যাপক সুযোগের কারণে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটির দ্বারা জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়ে বরং জনগণের সংবিধান প্রদত্ত বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে রুদ্ধ হওয়া এবং বাস্তবে নাগরিকের নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা তৈরি হয় তাহলে আমাদের এই স্বাধীনতা থেকে কি লাভ? বঙ্গবন্ধু কি এই স্বাধীনতার জন্য ৪৬৭৫ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন? নিশ্চয়ই না। যদি না হয়; তাহলে স্বাধীনতার এই মাসে আমাকে কারা অপহরণ করেছিলো তাদের মূলৎপাটনে ইসলামী ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করে স্বাধীনতা ব্যাংক করার পাশাপাশি সকল স্বাধীনতা বিরোধী-জঙ্গী-জামায়াতি-পীর-মুরীদি সংগফন-প্রতিষ্ঠান নিষিদ্ধ করতে হবে। আর এই দায়িত্ব পালন করতে হবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকেই। তিনি এই দায়িত্ব পালনে নিবেদিত থাকবেন; সত্যিকারের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে প্রকত তরুণদেরকে কালোহীন আলোকিত গণতন্ত্র উপহার দেবেন বলেই আমি বিশ্বাস করি।
ভাষা আন্দোলন যেখাে প্রেরণার উৎস। সেখানে নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক-শিক্ষা-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মী হিসেবে দাবী আসুন ঘুরে দাঁড়াই ইসলামী ব্যাংক নয় ‘স্বাধীনতা ব্যাংক’ হোক স্বাধীনতার মাসে প্রথম চাওয়া; এরপর সকল জঙ্গী-জামায়াতি সংগঠন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি শ্রদ্ধা ধর্মের প্রতি থাকুক সবার। কারণ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একজন শ্রষ্টা আমাদেরও আছে মানবতাবোধ…
লেখক– মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ-এনডিবি