![](https://www.naya-alo.com/wp-content/uploads/2018/01/Kurigram-old-childern-park-2-copy.jpg)
রাশিদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম থেকেঃ- ২২ লাখ মানুষের বসবাস কুড়িগ্রাম জেলায়। বিশাল জনগোষ্ঠির বিনোদনের জন্য আজো গড়ে ওঠেনি দর্শনীয় স্থাপত্য কিংবা বিনোদন কেন্দ্র। এখানকার মানুষগুলো কর্মঠ এবং কঠোর পরিশ্রমি হলেও ছুঁটির দিনে কিংবা কাজের ফাঁকে নিজের পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে পারেন না কোথাও। ফলে চিত্তবিনোদন থেকে বঞ্চিত এ জেলার মানুষ।
জানা গেছে, শুধুমাত্র শিশুদের বিনোদনের জন্য নামে মাত্র ২টি পার্ক রয়েছে। তবে এ পার্ক ২টির বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে।
সরেজমিন দেখা যায়, শিশুদের বিনোদনের জন্য দেড় যুগ আগে কুড়িগ্রাম নতুন ও পুরাতন শহরে ২টি শিশু পার্ক গড়ে উঠলেও বর্তমানে এর বেহাল অবস্থা। পার্কের দোলনা, স্লিপার, ঢেঁকিসহ প্রতিটি খেলার সামগ্রি ভেঙে গেছে। চুরি হয়ে গেছে দেয়ালের গ্রিল ও ও উপরিভাগের কাঁটাতার।
পুরাতন শহরের অধিবাসী ইউসুফ আলমগীর, বিপ্লব ও হামিদুল হকসহ আরও অনেকে জানান, পার্ক ২টি বর্তমানে গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। শিশুরা পার্ক দু’টিতে খেলতে এসে প্রায়ই নানা দুর্ঘটনার স্বীকার হয়। শিশুদের নিরাপত্তার জন্য পার্ক দু’টিতে নেই কোনো দারোয়ান বা নিরাপত্তাকর্মী।
তারা আরও জানান, দিন-দুপুরেই এ ২টি স্থানে চলে বখাটে আর মাদক সেবিদের আড্ডা। সন্ধ্যার পর ছিনতাইকারীদের ভয়ে ওই পার্কের সামনের রাস্তা দিয়েও কেউ যেতে চায় না।
নেশাখোর আর বখাটেদের ভয়ে শিশুরা পার্ক দু’টিতে খেলতে আসে না। পার্ক দু’টিতে খেলতে আসা শিশু মেরাজ (১২), য়সাল (১০) ও হিরা (৯) জানায়, পার্কের খেলার সামগ্রীগুলোর বেহাল দশার কারণে তারা ঠিকমত খেলতে পারে না। বখাটে এবং বড়দের আড্ডা থাকে সব সময়।
শিশুদের সঙ্গে আসা অভিভাবকরা জানান, কর্ম ব্যস্ততার ফাঁকে কুড়িগ্রামবাসীর জন্য জেলায় কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই, নেই কোনো বেড়াতে যাওয়ার জায়গা। শিশুদের বিনোদনের জন্য থাকা পার্ক দু’টি খেলার অনুপযোগী। জরুরি ভিত্তিতে পার্কগুলো শিশুদের খেলার উপযোগি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান তারা।
আরও জানান, পার্ক দু’টিতে বখাটে আর মাদক সেবিদের আড্ডার কারণে শিশুদের আনতে সাহস হয় না। কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে শিশু পার্ক দু’টি মেরামত ও মান উন্নয়ন করে বিনোদন উপযোগী করলে শিশুরা আবারও পার্কে আসবে। বিকশিত হবে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য।
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম আব্দুস সোবহান জানান, শহর জুড়ে আমাদের পুলিশি টহল জোড়দার রয়েছে। পার্ক দু’টিতে কোনো অসামাজিক কর্মকান্ড ঘটানোর সাহস দুস্কৃতিকারীদের নেই। কেউ চেষ্টা করলেই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম পৌর মেয়র আব্দুল জলিল জানান, সময়ের সঙ্গে নাগরিক জীবনের অনেক পরির্বতন হয়েছে। শহরে শিশুদের খেলাধুলা করার মতো মাঠ কমে গেছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৮ বছর আগে কুড়িগ্রাম ধরলা ব্রিজ পূর্ব পাড়ে দশ একর জায়গায় বিনোদন কেন্দ্রের সাইনবোর্ড দিলেও আসলেও নেই এর কোনো কার্যক্রম। ইউনিয়ন পৌরসভার সীমানা জটিলতা কেন্দ্র করে পৌর কর্তৃপক্ষ এবং ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ কেউই পার্কটি বাস্তবায়নে মনোযোগী হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভোট আসলেই পার্কটির সাইনবোর্ড মেরামত আর রংচং করা হয়। ভোট বেরুলেই ভুলে যায় এখানকার জনপ্রতিনিধিরা।