নয়া আলো ডেস্কঃ- নেপালের ত্রিভুবন বিমান বন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ২৩ বাংলাদেশির লাশ সনাক্ত করা হয়েছে। এই ২৩ জনের লাশ আজ সোমবার দেশে আনা হবে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি কার্গো বিমানে করে বিকাল চারটায় লাশ আনা হবে বলে আইএসপিআর জানিয়েছে।
এদিকে নিহত তিন বাংলাদেশি পলাশ রায়, আলিপুজ্জামান এবং নজরুল ইসলামের লাশ এখনো সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের ডিএনএ টেস্ট করা হবে। ইতিমধ্যে নেপাল সরকার এ তিনজনের লাশ সনাক্তকরণের জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে। লাশের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে স্বজনদের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে ক্রসম্যাচিং করে লাশ সনাক্ত করা হচ্ছে। যে ২৩ জনের লাশ সনাক্ত করা হয়েছে তারা হলেন : অনিরুদ্ধ জামান, তাহিরা তানভীন শশী, মিনহাজ বিন নাসির, রাকিবুল হাসান, মতিউর রহমান, রফিক উজ জামান, তামারা প্রিয়ন্ময়ী, আকতার বেগম, হাসান ইমাম, এসএম মাহমুদুর রহমান, বিলকিস আরা, ফয়সাল আহমেদ, সানজিদা হক, নুরুজ্জামান, নুরুন নাহার, নাজিয়া আফরিন, আখি মনি, এফ এইচ প্রিয়ক, উম্মে সালমা, বিমানটির পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান, কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ ও কেবিন ক্রু খাজা সাইফুলাহ, শারমনি নাবিলা। তবে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২২ নেপালি যাত্রীকেই সনাক্ত করা গেছে।
এদিকে, বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, যে তিনজনের লাশ সনাক্ত করা হয়নি তাদের নিকটাত্মীয়দের (বাবা-মা, ভাই, বোন, সন্তান) ডিএনএর নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য যোগাযোগ করতে সিআইডির ০১৭৩০৩৩৬৩২৬, +৮৮০২৪৮৩২২০১৯ নম্বরে যোগোযোগ করতে বলা হয়েছে।
গতকাল রবিবার নেপালে টিচিং হাসপাতালের মর্গের বাইরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ইউএস-বাংলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আসিফ বলেন, যেসব বাংলাদেশির লাশ শনাক্ত করা গেছে তাদের লাশ সোমবার দেশে পাঠানো হবে।
জানা গেছে, গতকাল রবিবার বিকাল চারটার দিকে সনাক্ত হওয়া লাশগুলো গোসল করিয়ে কফিনে ঢুকানো হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ছয়টায় এসব লাশ নেপালে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসে নেয়া হবে। সেখানে একদফা জানাজা শেষে সকালে নিহতদের স্বজন ও ডাক্তাররা ঢাকায় রওনা হবেন। পরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানে করে লাশগুলো দেশে আনা হবে। বিকাল চারটায় বিমানটি বিমান বাহিনীর বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিতে পৌঁছাবে বলে আইএসপিআর সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে গতকাল বিকালে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০৭২ ফ্লাইটে করে দেশে ফিরেন শাহীন বেপারী। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ নিয়ে বিমান দুর্ঘটনায় আহত সাত বাংলাদেশি দেশে আসলো। আহত অন্য যাত্রীদের মধ্যে কাঠমান্ডুর নরডিক হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ইয়াকুব আলীকে আজ সকাল সাতটায় নয়াদিল্লিতে নেয়া হচ্ছে। তাকে গতকাল সেখানে নেওয়ার কথা ছিল। আর এমরানা কবির হাসিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয় শনিবার রাতে। তিনি এখন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। আহতদের মধ্যে হাসি ও ইয়াকুব আলীর অবস্থা শঙ্কাজনক।
আহত শাহীন বেপারী শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ও ১৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিমের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, শাহীনের ১৫-১৬ শতাংশ পুড়ে গেছে। শেহরিনও শঙ্কামুক্ত নন।