সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কাটাগাড়ি-রানীহাট আঞ্চলিক সড়কের দেওড়া নামক স্থানের কালভার্টের পশ্চিম পাশের অর্ধেকের বেশি অংশ প্রায় পাঁচ মাস যাবত ভেঙ্গে গেছে। তারপরও মেরামত কিংবা নির্মাণ করা হয়নি। একারণে প্রতিনিয়ত ছোট ছোট দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। ফলে দুই উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবত কালভার্টটি ভেঙে গেছে কিন্তু কর্তৃপক্ষ পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছে না। এতে করে যে কোন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ তাড়াশ কাটাগাড়ি-রানীহাট আঞ্চলিক সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ একটি আঞ্চলিক সড়ক। গত ২০১০-১১অর্থ বছরে তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অর্থায়নে ২ লাখ ৩০ হাজার ৭১৫ টাকা ব্যয়ে ১০০ মিটার দীর্ঘ দেওড়া বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে কালভার্টটি একপাশে ভেঙে গেলেও সংস্কার করা হয়নি।
সরজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত এ সড়কে শত শত মোটরসাইকেল, ট্রাক, ভ্যান, নসিমন, করিমন, সিএনজিসহ বিভিন্ন রকমের মোটরযান চলাচল করছেন ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক সংলগ্ন এলাকায় বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান, প্রসিদ্ধ হাটবাজার, ধর্মীয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এবং মাঠ থেকে ফসল আনা নেওয়ার একমাত্র ব্যস্ততম এ সড়কটি। যে কারণে এলাকারটির হাজার হাজার মানুষের যাতাযাতের সড়কটি গুরুত্ব বহন করে থাকে। তাই দ্রুত এই কালভার্টটির সংস্কার করা না হলে যে কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয় ধান ব্যাবসায়ী করিম বলেন,সাপ্তাহিক চান্দাইকোনা হাটে নসিমনে গরু নিয়ে যাতায়াত করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। কালভার্টটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বজোলাল বলেন, প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবার ঐতিহ্যবাহী রানীরহাট এ হাটে কয়েক গ্রামের মানুষ ধানের গাড়িসহ বিভিন্ন পণ্য বহনের ট্রাক যাতায়াত করত। তবে পাঁচ মাস ধরে শুধু ভাঙ্গা কালভার্টের কারণে চলাচল বন্ধের উপক্রম।
রানীহাট এলাকার ধান ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল বারিক জানান, কিছুদিন আগে ওই এলাকায় ধান কিনে ভ্যানে করে আনতে হিমশিম খেতে হয়েছে আমাদের। সড়কের কালভার্টটির বড় অংশ ভেঙে গেছে। কাটাগাড়ি, টাগড়া, হাড়িসোনাসহ ৬ থেকে ৭টি গ্রামের ফসলী মাঠের পানি নিষ্কশানের জন্য দেওড়া নামক স্থানে আঞ্চলিক সড়কে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে কালভার্টটির উপরিংশের ঢালাই ভেঙ্গে লোহার রড বের হয়ে পড়েছে। যাতে করে যানবাহন নিয়ে চলাচলে ঝুঁকিও বেড়ে গেছে বহুগুণ। তাই পথচারী ও স্থানীয়দের দাবি, কালভার্টটি নতুন করে নির্মাণ করার।
দেশিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসাক বলেন, কালভার্টের সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত কালভার্ট পুনরায় নির্মাণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ফজলুল হক বলেন, কালভার্টের ভাঙন বিষয়টি আমি জেনেছি। রবিবার অফিস থেকে লোক পাঠিয়ে কালভার্টি দেখে দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
Please follow and like us: