
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মিলন মেলায় অংশ নিলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসর গ্রহন করা ৬শতাধিক প্রধান শিক্ষক। শনিবার দিনব্যাপী উপজেলা পরিষদে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক মুজিব। সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠানে অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা আসতে শুরু করেন। দীর্ঘ বছর পর একে অপরের সাথে দেখা হওয়ায় অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। জড়িয়ে ধরেন একা অপরকে। দীর্ঘদিনের সাথীদের পেয়ে গল্পে মেতে উঠেন। শেয়ার করেন তাদের অবসর জীবনের সুখ দুঃখের কথা গুলো।
কথা হয় ২০০১ সালে অবসর নেওয়া উপজেলার শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এয়ার আহমেদ চৌধুরী সাথে। তিনি বলেন ২০০১ সালে যখন আমি অবসর গ্রহণ করি বিদ্যালয় থেকে বিদায় নিচ্ছিলাম তখন মনে হয়েছিল আমি যেন কি হারিয়ে চলে যাচ্ছি। অশ্রুসিক্ত বিদায় নিয়ে দীর্ঘ ২২ বছর কাটিয়ে দিলাম। আজও মনে হয় আমি যেন এখনো শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছি।
২২ বছর পর আজ পুরাতন সাথীদের পেয়ে সত্যি ভালো লাগছে। এরমধ্যে আমার অনেক সহযোদ্ধা পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেছে।
কথা হয় ২০০৭ সালে অবসর নেওয়া মুন্সিরহাট বসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আশ্রাফের সাথে। তিনি বলেন, অবসর নেওয়া পর মনে হয়েছিল আর হয়তো পুরাতন সাথিদের সাথে আর দেখা হবে না। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আমাদের দীর্ঘদিনের পুরাতন সাথিদের একত্রিত করলো। সত্যি আজকের এই দিন আনন্দের হয়ে থাকবে।
২০০৬ সালে অবসর নেয়া চকলক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অবসর নেওয়া যে কত কষ্টের তা বলে বুঝাতে পারবো না। আমরা যখন শিক্ষকতা করছিলাম তখন শিক্ষা ব্যবস্থা এতো উন্নত ছিল না। বিদ্যালয়ে ছিল না বহুতল ভবন। ভাঙ্গা স্কুলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হয়েছিল কোমলমতি শিশুদের। আজ প্রাথমিকের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক উন্নতি হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবদুল জলিলের সভাপতিত্বে অন্যাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মান্নান, চৌদ্দগ্রাম পৌর মেয়র জিএম মীর হোসেন মীরু, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রহমত উল্যাহ বাবুল, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক গাজীউল হক চৌধুরী ও উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক বাবলুসহ আরো অনেকে।