২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-
  • হোম
  • দেশজুড়ে
  • ফুলবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী চড়ক মেলায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড়




ফুলবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী চড়ক মেলায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড়

মোঃ আবু শহীদ, ফুলবাড়ী,দিনাজপুর করেসপন্ডেন্ট।

আপডেট টাইম : এপ্রিল ১৪ ২০২৪, ১৫:৩০ | 696 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

শত শত মানুষের অপলক দৃষ্টি ৩০ ফুট উচ্চতার কাঠের দন্ডের দিকে। দঁড়িতে ঝুলে শূন্যে ঘুরছেন একজন মানুষ । দঁড়িটি বাঁধা ওই মানুষের পিঠের চামড়ার সঙ্গে গাঁথা বড় দুটি বড়শিতে। চারিদিকে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি চলছে । বাজছে ঢাকঢোল। ছিটানো হচ্ছে খাজা-বাতাসা ও কলা।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের কিসমত লালপুর শ্মসানডাঙ্গা চড়ক কালী মন্দির চত্বরে এমন দৃশ্য দেখা মেলে। এ উপলক্ষে সেখানে বসেছে একদিনের গ্রামীণ মেলা। মেলাকে কেন্দ্র করে সেখানে নানা বয়সী শত শত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভক্ত ও দর্শনার্থীরা সমবেত হয়েছেন।
আয়োজক সূত্র জানা যায়, বড়শি বিদ্ধ মানুষকে ঘোরানোর আগে সারা দিন ধরে নানা আচার পালন করা হয়। মানুষ ঘূর্ণনের জন্য মাঠের মাঝখানে পোঁতা হয় কাঠের দন্ডটি। অনেকটা লাঙলের জোয়ালের মতো আরেকটি কাঠ এই কাঠের ওপর লম্বালম্বিভাবে বসানো হয়। কাঠের মাথায় থাকে মাটি পর্যন্ত ঝোলানো কয়েকটি লম্বা দঁড়ি। এর মধ্যে ঝোলানো একটি দড়িতে একজন মানুষের পিঠে দুটো বশির কল ফুটিয়ে তাকে ঝোলানো হয়।কাঠের দন্ডের ঠিক নিচে একদল মানুষ শক্ত হাতে ঘোরাতে থাকেন কাঠের দন্ডটিকে। এভাবেই বড়শি বিদ্ধ মানুষটিকে চারিদিকে ঘোরানো হয়। এটাই চড়ক পূজার আকর্ষণ।
বড়শিতে ঝুলে থাকা গজেন রায় (৪৫) তাঁর সঙ্গে থাকা ফুল-জল, আবির, কলা, বাতাসা ইত্যাদি ছিটিয়ে দিচ্ছেন অগণিত ভক্ত-দর্শকের দিকে। গজেন রায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা।
চড়ক পূজার উৎসবে আসা শেফালী রানী ও অরুণ কুমার বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই চড়ক উৎসবের আয়োজন শুরু হয়। ধর্মানুরাগী ‘সন্ন্যাসীরা’ বাড়ি বাড়ি গিয়ে নৃত্যগীতের মাধ্যমে চড়ক পূজার জন্য চাল ও অর্থ সংগ্রহ করেন। এখানে প্রায় এক যুগের বেশি সময় থেকে এই চরক উৎসবের আয়োজন করা হয়।
উৎসব আয়োজক কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য সুকুমার রায় ও সম্পাদক যাদব রায় বলেন, চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে পুরো বৈশাখ মাসজুড়ে শ্মশান কালী পূজোর আয়োজন করা হয়। প্রতিবছর কিসমত লালপুর শ্মশানে চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন কালি মন্দিরের পুজা কে কেন্দ্র করে এই উৎসবটির আয়েজন করা হয়। এই পূজোকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী মেলা বসে। মহদিপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রমিলা রানী ও সুবল রায় বলেন, এই চড়ক মেলা উপলক্ষে আমাদের পুরো গ্রাম উৎসবে মেতে ওঠে। সবাই মেয়ে-জামাইসহ আত্মীয় স্বজনদের আমন্ত্রণ জানায়। তারা আসেন। রাতে কালী পূজো হয়। দিনে মেলা হয়। মেলাসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে মেলায় বিভিন্ন দোকান বসে। এ মেলা শেষ পর্যন্ত আর হিন্দু সম্প্রদায়ের মেলা থাকে না। এটা এ অঞ্চলের সকল ধর্মের মিলনমেলায় পরিণত হয়,কার সকলেই তা উপভোগ করতে আসেন।
বড়শিতে ঝুলে থাকা গজেন রায় বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্নস্থানে এই কাজ করছেন তিনি। তার পিঠে অগণিত ছিদ্র রয়েছে। প্রত্যেকবার পিঠের ভিন্ন ভিন্নস্থানে ছিদ্র করে বড়শির কল লাগানো হয়। এটি করতে বেশ সাধনার প্রয়োজন।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET