
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (পিওন) কে মারধরের অভিযোগে চাঁদপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হককে দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
পরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের আশ্বাসে ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী স্কুল ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় পৌর এলাকার চাঁদপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (পিওন) আসাদুল আলম বেতনের জন্য প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের কাছে প্রত্যায়নপত্র নিতে গেলে, প্রধান শিক্ষক ওই পিয়নের ওপর চড়াও হন। পরে এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তিসহ পিওন কে মারপিটের অভিযোগ ওঠে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ওই প্রধান শিক্ষককে তার অফিস কক্ষে দুই ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং তার শাস্তিসহ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিদ্যালয়ের মুল ফটকের সামনে অবস্থান নেয়।পরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তাদের দেয়া আশ্বাসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই প্রধান শিক্ষকের ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। পিয়ন আসাদুল আলমের সাথে মারপিটের ঘটনাটি জঘন্যতম ঘটনা। তাদের ছেলে-মেয়েরা ওই স্কুলে লেখাপড়া করে। কর্তৃপক্ষ নিজেরাই এভাবে মারপিট করলে বাচ্চাদের কি শিক্ষা দিবেন । তারা এ ঘটনার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানান।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ওই পিয়ন আসাদুল আলম অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেতনের জন্য প্রত্যায়নপত্র চাইলে প্রধান শিক্ষক তা দিতে চায় না। শিক্ষা কর্মকর্তাকে অনুরোধ করে এর আগে কোনোরকমে বেতন তুলেছি । প্রত্যয়ন না পেলে এরপর থেকে বেতন তুলতে পারব না। তাই প্রত্যায়ন চাইতে গেলে প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং একসময় আমাকে মারপিট শুরু করেন। আমি ওই শিক্ষককের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই পিয়ন প্রত্যয়ন নিতে এসে আচমকা আমার পিঠে আঘাত করে, আমার টেবিলে রাখা তার কাজগপত্র নিয়ে ছিটকে বেরিয়ে যায়। এরপর সে আমার গায়ে কেনো হাত তুললো, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। তবে আমি তাকে মারপিট করিনি। এখন উল্টো দোষারোপ করছে। ওই পিয়নের আচার-ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। সে কাউকেই সম্মান দেয় না। ইতোপূর্বেও বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুরজিত সরকার বলেন, খবর পেয়ে আমরা এসে এলাকাবাসীসহ দুই পক্ষকে শান্ত করি। বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহে শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বসে সুরাহা করা হবে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্যার ছুটিতে আছেন। তিনি এলে দুপক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে।