কুমিল্লায় কোটা আন্দোলনে বাধা দেয়ার ভিডিও করায় এক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে হলে নিয়ে মারধরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। চারজনের নাম উল্লেখসহ ২০জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। শুক্রবার (১৩ জুলাই) ঘটনার পর শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার কোতয়ালী থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন শিক্ষার্থীর বাবা আলী আসাদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, লিখিত অভিযোগে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৬জনকে আসামি করা হয়।
সূত্রমতে, কুমিল্লায় কোটা আন্দোলনে বাধা দেয়ার ভিডিও করায় এক শিক্ষার্থীকে তুলে হলে নিয়ে মারধর করে ছাত্রলীগের কলেজ পদপ্রত্যাশীরা।শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের নজরুল হলে এ ঘটনা ঘটে। এবিষয়ে চারজনের নামে কোতয়ালী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তামিমের বাবা আলী আসাদ।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র হাবিব গাজী, মাস্টার্স সমাজকর্ম বিভাগের সফিউল্লাহ, স্নাতক ইংরেজি বিভাগের এইচ এম তানভীর, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগেরর চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন। এছাড়াও সহযোগীতায় ১২-১৬ জন জড়িত আছে।
তামিমের বাবা আলী আসাদ বলেন, তারা নজরুল হলের ২য় তলার একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখে। এসময় তাকে শারীরিকভাবে বেদম প্রহার করে। রক্তাক্ত জখমে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার পিঠে শক্ত লাঠি দিয়া আঘাত করে। ডান হাতের বৃদ্ধাঙুলের নখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে বাম হাতে গভীর জখম করে। বাম ঘাঁড়, বাম হাত, বাম চোখের কোনায় আঘাত করে। হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় আঘাত করলে সে স্মৃতি হারিয়ে ফেলে। এরপর থেকে সে এলোমেলো কথা বলছে। ঘটনার সময় তাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করে তাদের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। এবং তার হাতের ব্যবহার করা মোবাইলটি তারা আটক করে রাখে এবং তার পকেটে থাকা প্রায় ছয় হাজার টাকা তারা নিয়ে যায়।
আহত তামিম জানায়, শুক্রবার বিকেল ৩টায় কলেজের বঙ্গবন্ধু মুর্যালের সামনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কর্মসূচি করা ছাত্রদের ভিডিও ধারণ করছিল। এসময় কলেজের আবাসিক নজরুল হলের কয়েকজন ছাত্র তার মোবাইল কেড়ে নিয়ে যায়। মোবাইল দেবে বলে তাকে কলেজের ধর্মপুর ক্যাম্পাসের ডিগ্রি শাখার একমাত্র আবাসিক হল নজরুল হলে নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা নির্যাতনের পর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে তত্বাবধানে তাকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কলেজ অধ্যক্ষ ড. আবু জাফর খান বলেন, বিষয়টি আমি ঢাকা থাকতে জেনেছি। হলের প্রভোষ্টকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
Please follow and like us: