মেহেদী হাসানঃ আজ পয়লা ডিসেম্বর। শুরু হলো মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়ের মাস। রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের গৌরবগাথা বিজয়ের মাস সূচনা হলো। ১৯৭১ সালে ৯ মাসব্যাপী মুক্তি সংগ্রাম ডিসেম্বর মাসে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয়। চার দিকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানি বাহিনী বিভিন্ন রণাঙ্গনে পর্যুদস্ত হতে থাকে।
২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে নিরীহ বাঙালিদের ওপর নির্বিচারে গণহত্যা চালানো হয়। বাঙালিদের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করা সত্ত্বেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তার হাতে শাসনভার ন্যস্ত করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর পরিণতিতে আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন স্বাধীনতার দাবিতে পরিণত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত করার কারণে ফুঁসে ওঠে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ। একপর্যায়ে সশস্ত্র পন্থায় বিক্ষোভ দমনের ব্যর্থ চেষ্টা চালায় সামরিক জান্তা; কিন্তু তাদের সেই চেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় সমগ্র জাতি। শুরু হয় আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল, স্থল আর আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে।
৭ মার্চ ১৯৭১। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে যে ভাষণ দেন সেখানে তিনি ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে উল্লেখ করেন। এরপর সামরিক বাহিনী দিয়ে নিরীহ জনতার ওপর চালানো হয় বর্বর আক্রমণ। মার্চ মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ মাসে লাখ লাখ মানুষ গৃহহারা হয়ে পড়েন। জীবন বিসর্জন দেন অগণিত মানুষ। ডিসেম্বরের শুরুতে রক্তক্ষয়ী এ সংগ্রাম পরিণতির দিকে অগ্রসর হয়।
লেখকঃ মেহেদী হাসান, ছাত্র ও সাংবাদিক ।