মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, ষ্টাফ রিপোর্টারঃ মাদক, জঙ্গি-সন্ত্রাসমুক্ত মোহাম্মদপুর এলাকা গড়ার লক্ষ্যে ২২ জুন ২০১৮ রোজ শুক্রবার নবোদয় হাউজিং কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মোহাম্মদপুর ঢাকা মুসল্লিদের সামনে বয়ান করছেন মোহাম্মদপুর থানার জনপ্রিয় অফিসার ইনচার্জ জনাব জামাল উদ্দিন মীর।
জনাব জামাল উদ্দিন মীর বলেন, মাদক জঙ্গিবাদের মতো বড় সমস্যা। জঙ্গি নির্মূল করতে যে ভাবে অভিযান চালানো হয়েছে, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধেও সেরকম অভিযান চলছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। জনগণকে সাথে নিয়ে জঙ্গিবাদের মতো মাদককেও নির্মূল করা হবে।
তিনি আরো বলেন, কোন ধর্মই মানুষ হত্যাকে সমর্থন করে না। যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে তাদের কোন ধর্ম নাই। বাংলাদেশের জনগণ কোনও ধর্মাদ্ধ-উগ্রবাদি গোষ্ঠীর কাছে মাথা নত করেনি। সন্ত্রাসীদের কোন ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। এদের বিরুদ্ধে প্রতিটি পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি স্কুল, কলেজ, মসিজদ, মাদ্রাসা শিক্ষকদের প্রতি আহ্বাবান জানিয়ে বলেন আপনাদের প্রতিষ্ঠানেও জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তি প্রতিরোধ করার জন্য প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাবেন।
জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তি প্রতিরোধ বাড়ির মালিকদেরকে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অপরাধী বিভিন্ন এলাকায় ভূয়া পরিচয় দিয়ে অনেক সময় বাসা ভাড়া করেন। বেশ কিছু বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরকও উদ্ধার করছে। ভাড়াটিয়াদের সঠিক তথ্য ও ছবি থাকলে তাদেরকে চিহ্নিত করা সহজ হবে। এ সব দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করে থানাতে জমা দিবেন।
এছাড়াও আপনাদের বাসা বাড়ীতে কাজের ছেলে-মেয়ে ও ড্রাইভার রাখেন, তাদের বিষয়ও সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে থানাতে জমা দিবেন। তারা যদি আপনাদের বাসা বাড়ীতে কোন রকম দুর্ঘটনা ঘটায় তাহলে আমাদের চিহ্নিত করতে সহজ হবে। মোহাম্মদপুরে এমনও ঘটনা ঘটছে বাসা বাড়ীতে কাজের ছেলে-মেয়ে ও ড্রাইভার চুরি করে পালিয়ে গেছে কিন্তু থানাতে এসে তাদের কোন তথ্য দিতে পারে নাই। কোন বাড়িতে জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তি ধরা পড়লে সে বাড়ির মালিককেও ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তির বিষয়ে অভিভাবকদের প্রতি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আমার আপনার সন্তান কোথায় যায়, কি করছে, কাদের সঙ্গে মিশছে, সময় মতন স্কুল-কলেজ থেকে বাসা বাড়ীতে আসছে কিনা, ল্যাপটপ-মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন খারাপ লোকজনের সাথে যোগাযোগ করছে কিনা, সে সব বিষয়ে অবশ্যই খোজ খবর রাখবেন। সন্তানদের যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে সেটা ভাল করে শোনা এবং তাদের সঙ্গে পারস্পরিক একটি আস্থার সম্পর্ক তৈরী করা। আপনার আমার সন্তান মানুষের মতন মানুষ না হলে সম্পতি থেকেও কোন লাভ হবে না।
তিনি আরো বলেন গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গীরা হামলা করে কযেকজন বিদেশীকে হত্যা করেছিলো। তাছাড়াও উপমহাদেশের বৃহত্তম শোলাকিয়ার ঈদজামাতকে টার্গেট করে জঙ্গী হামলা করেছিলো। আমরা আগে মনে করতাম সবি হয়তো মাদ্রাসার গরীব ছাত্রদের টার্গেট করে ধর্মাদ্ধ-উগ্রবাদি গোষ্ঠীরা এ গুলি করছে। আসলে সেটা পুরাপুরি সটিক না। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন নামকরা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সাবেক শিক্ষকরা এর জড়িত।
ওসি জামাল উদ্দিন মীর বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশমাতৃকার তরে প্রথম যে বাহিনী সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তা হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। এতে অনেকেই শহীদ হন। বর্তমানে জঙ্গী, সন্ত্রাসীদের দমন করতে যেয়ে অনেক পুলিশ অফিসার শহীদ হয়েছে। কাজেই জঙ্গী, সন্ত্রাসীদের এদেশে আশ্রয় দিতে পারি না। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী বর্তমানে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসীদেরকে দমন করতে সক্ষম হয়েছে। তাই আসুন আমরা সকলে মিলে জঙ্গী, সন্ত্রাসমুক্ত করি। জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তি এই বাংলাদেশে জায়গা হতে পারে না।
মোহাম্মদপুরে জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ এবং মাদকাসক্তির প্রতিরোধ করার জন্য মসজিদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, খতীব এবং মুসল্লিগণ মোহাম্মদপুর থানার জনপ্রিয় অফিসার ইনচার্জ জনাব জামাল উদ্দিন মরীকে অভিনন্দন জানান।