আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক সমাপনী পুনঃ নিরীক্ষনের খাতা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ১৯৩ শিক্ষার্থী ফেল করে। যা উপজেলার অন্য বছরের তুলনায় খুব খারাপ ফলাফল হয়েছে। এ জন্য উপজেলার ১৭৩ জন শিক্ষার্থী পুনঃ নিরীক্ষনের জন্য আবেদন করেন। নিরীক্ষনের খাতা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা নিরীক্ষা করবেন বলে সরকারী নিয়ম রয়েছে। তার পরেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল হক তালুকদার আর্থিক ভাবে লাভবান হয়ে গত ২৯ জানুয়ারী সন্ধ্যায় আগৈলঝাড়া সদর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান ও নুরুল আমিনকে দিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত নিরীক্ষনের খাতার নম্বর পরিবর্তন ও গুজগাছ করেন। নিরীক্ষনের খাতা শিক্ষক দিয়ে গুজগাছ করার কথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক নবনী কুমার বৈদ্য ও শিক্ষক জাহিদ হোসেন খান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল হক তালুকদারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি শিক্ষক দিয়ে খাতা গুজ করার কথা স্বীকার করেন। শিক্ষা কর্মকর্তার সুনজরে থাকা আগৈলঝাড়া সদর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকুরিতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আহুতি বাটরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারপাইকা হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ের খাতার নম্বর ওই শিক্ষকদের দিয়ে ঠিক করে দেয়া হয়। শিক্ষা কর্মকর্তার কারনে ২০১৬ সালের চেয়ে চেয়ে ২০১৭ সালে এপ্লাস কম পেয়েছে। এর পূর্বেও শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে মোঃ সিরাজুল হক তালুকদারের বিরুদ্ধে ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে শি¬প কার্যক্রমে ১ হাজার টাকা, রুটিন মেইনটেন্সে ১ হাজার টাকা, প্রাক-প্রাথমিক উপকরন ক্রয় ১ হাজার টাকা, লেট্রিন মেরামতে ১ হাজার টাকা, ক্ষুদ্র মেরামত কার্যক্রমে ১হাজার টাকা করে আদায় করতেন। এ ছাড়াও শিক্ষকদের বদলীর জন্য ১০ থেকে ২০হাজার টাকা আদায় করেন। চাহিদামত টাকা দিতে পারলে শিক্ষকের পছন্দমত বিদ্যালয়ে বদলী করতেন। না দিতে পারলে ওই শিক্ষকদের কর্মকর্তার ইচ্ছেমত বিদ্যালয়ে বদলী করতেন। শিক্ষকরা তার ভয়ে এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। যে শিক্ষক এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেন তাদের শোকজসহ বেতন বন্ধ করার হুমকি দেয় ওই শিক্ষা কর্মকর্তা। এ ছাড়াও শিক্ষা কর্মকর্তা মো.সিরাজুল হক তালুকদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বলে একাধিক ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.সিরাজুল হক তালুকদার তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবী করে সাংবাদিকদের বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে দুইবার তদন্ত করিয়েছেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমার কাছে সমাপনী পরীক্ষার খাতা চাইলে তা আমরা সীলগালা করে প্রেরন করেছি।