মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, ষ্টাফ পিরোর্টারঃ- ইভটিজিং,বাল্যবিবাহ, মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলার হাওয়ার অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধার কৃতি সন্তান ও ২০১৭ সালে আইজিপি পদক প্রাপ্ত মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর। আজ ২ মার্চ ২০১৮ রোজ শুক্রবার শেরশাহা সুরী রোড, বায়তুল ফালাহ মসজিদ, মোহাম্মদপুর ঢাকা, জুমার নামাজের পূর্বে মুসল্লিদের সঙ্গে মতবিনিমকালে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোন ধর্মই মানুষ হত্যাকে সমর্থন করে না। যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে তাদের কোন ধর্ম নাই। বাংলাদেশের জনগণ কোনও ধর্মাদ্ধ-উগ্রবাদি গোষ্ঠীর কাছে মাথা নত করেনি। সন্ত্রাসীদের কোন ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। এদের বিরুদ্ধে পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমাজে এসব অপরাধীর সংখ্যা খুবই কম। জনগণ পুলিশকে মাদক ব্যবসায়ী,বাল্যবিবাহ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে তারা সমাজে কোনো স্থান পাবে না। ইভটিজিং,বাল্যবিবাহ, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও মাদকের বিষাক্ত ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করাসহ সমাজ থেকে সব অপরাধ দূর করার উদ্দেশে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ কাজ করার আহ্বান জানান।
জঙ্গি-সন্ত্রাস প্রতিরোধ বাড়ির মালিকদেরকে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অপরাধী ও জঙ্গীরা বিভিন্ন এলাকায় ভূয়া পরিচয় দিয়ে অনেক সময় বাসা ভাড়া করেন। বেশ কিছু বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরকও উদ্ধার করছে। ভাড়াটিয়াদের সঠিক তথ্য ও ছবি থাকলে তাদেরকে চিহ্নিত করা সহজ হবে। এ সব দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করে থানাতে জমা দিবেন। তাছাড়াও আপনাদের বাসা বাড়ীতে কাজের ছেলে-মেয়ে ও ড্রাইভার রাখেন, তাদের বিষয়ও সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে থানাতে জমা দিবেন। তারা যদি আপনাদের বাসা বাড়ীতে কোন রকম দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায় তাহলে আমাদের চিহ্নিত করতে সহজ হবে।
তিনি জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তির বিষয়ে অভিভাবকদের প্রতি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আমার আপনার সন্তান কোথায় যায়, কি করছে, কাদের সঙ্গে মিশছে, সময় মতন স্কুল-কলেজ থেকে বাসা বাড়ীতে আসছে কিনা, ল্যাপটপ-মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন খারাপ লোকজনের সাথে যোগাযোগ করছে কিনা, সে সব বিষয়ে অবশ্যই খোজ খবর রাখবেন।
তিনি আরো বলেন গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গীরা হামলা করে কযেকজন বিদেশীকে হত্যা করেছিলো। তাছাড়াও উপমহাদেশের বৃহত্তম শোলাকিয়ার ঈদজামাতকে টার্গেট করে জঙ্গী হামলা করেছিলো। আমরা আগে মনে করতাম সবি হয়তো মাদ্রাসার গরীব ছাত্রদের টার্গেট করে ধর্মাদ্ধ-উগ্রবাদি গোষ্ঠীরা এ গুলি করছে। আসলে সেটা পুরাপুরি সটিক না। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সাবেক শিক্ষকরা এর জড়িত।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশমাতৃকার তরে প্রথম যে বাহিনী সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তা হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। এতে অনেকেই শহীদ হন। বর্তমানে জঙ্গী, সন্ত্রাসীদের দমন করতে যেয়ে অনেক পুলিশ অফিসার শহীদ হয়েছে। কাজেই জঙ্গী, সন্ত্রাসীদের এদেশে আশ্রয় দিতে পারি না। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী বর্তমানে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসীদেরকে দমন করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান ওসি জামাল উদ্দিন মীর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকা মহানগর-উত্তর জাতীয় পাটি,মোহাম্মদপুর থানার জনপ্রিয় ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ হাফিজুর রহমান, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম-মহাসচিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও শিক্ষা সচিব এবং ভাইস প্রিন্সিপাল অব বাইতুল ফালাহ কাওমী মাদ্রাসার মুহাম্মাদপুর ঢাকা, খতিব-মাওলানা আব্দুল আওয়াল, বায়তুল ফালাহ মসজিদ, মোয়াজ্জেম- মোঃ নুরুল ইসলাম, বায়তুল ফালাহ মসজিদ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা এবং মসজিদের মুসল্লিগণ’সহ প্রমুখ।