
নারী উন্নয়নে যেই দেশ যত বেশি অগ্রসর হয়, সেই দেশ ততো বেশি উন্নত হয়। কারন পুরুষের একার পক্ষে একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়। দেশ ও সমাজের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় নারীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বর্তমানে নারীরা ব্যাংক-বিমা অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসকারি অফিসে অবাধে চাকরি করছে। পূর্বের চেয়ে নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই নারীরাও তাঁদের যথাযথ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজের ও পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করতে সক্ষম হচ্ছে। বর্তমান আধুনিক যুগে পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে নারীরাও তথ্যপ্রযুক্তিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের চেয়েও এগিয়ে রয়েছে।
প্রাচীন যুগে কন্যাশিশু ভূমিষ্ট হলে তাঁর পরিবারের অনেকেই নারাজ হতো। কন্যাশিশু জন্মদানের জন্য ঐ মাকে নানান কথা শোনাতো আশপাশের মানুষজন। কন্যা শিশু পরিবারের জন্য অভিশাপ ! একসময় তাঁরা এই কুসংস্কার বিশ্বাস করতো। আর এসব কারনে প্রাচীন যুগে নারীরা সকল ক্ষেত্রেই পিছিয়ে থাকতো। কর্মক্ষেত্রে নারীর কোনো অবদান ছিলো না সেইসময়। তবে বর্তমানে দিন পরিবর্তন হয়েছে। আর সেইসাথে পরিবর্তন হয়েছে মানুষের চিন্তাভাবনা। এখন নারীরা নেই কোনো বন্দীঘরে! তাঁদেরকে তালা দিয়ে আটকে রাখার সুযোগ এখন আর নেই৷ নারীরা এখন স্থলপথ, নদীপথ ও আকাশপথেও সমানভাবে এগিয়ে চলেছে।
আজকের কন্যাশিশু, আগামীর ভবিষ্যৎ। কন্যা শিশু পরিবারের জন্য অভিশাপ নয়, বরং আশীর্বাদ স্বরূপ। মহান সৃষ্টিকর্তা যখন তাঁর কোনো বান্দার ওপর খুশি হয় তখন তাঁকে উপহার হিসেবে কন্যা শিশু দান করেন। তাই কখনো কোনো পরিস্থিতিতেই কন্যাশিশু জন্ম নিলে মন খারাপ করা যাবে না। কন্যাশিশুকে যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, শিষ্টাচার, আদব ও ধর্মীয় বিশ্বাসের অধিকারী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে৷ সকল ভালো কাজের সাথে নারীদের সম্পৃক্ত রাখা প্রয়োজন।
একটি কন্যাশিশু জন্মের পর থেকেই পারিবারিকভাবে তাকে যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে বড় করে তুলতে হবে। পরিবারের অন্যান্য পুরুষ সদস্যদের সাথে তাঁর কোনো বৈষম্য তৈরি করা উচিত নয়। সামাজিকভাবে একজন তরুণীকে তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে আমাদের সকলের। কোনো নারী বা কন্যাশিশু যেনো সমাজের কোনো অংশেই অবহেলিত বা উপেক্ষিত না হয় সেদিকে সমাজের সকলের অবগত থাকতে হবে। নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিনোদনকেন্দ্র, সাহিত্য কেন্দ্র তৈরিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের সকল ক্ষেত্রে নারীদের সুযোগ দিতে হবে। নারীদের চলাচলের পথ আরো সুগম করতে হবে। রাজধানীসহ দেশের সকল স্থানে, সকল পরিবহনে নারীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করা সরকারের অন্যতম দ্বায়িত্ব। আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীদের প্রতি রইলো সম্মান ও বিনম্র শ্রদ্ধা। নারীরা এগিয়ে যাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত এটাই প্রত্যাশা থাকবে।
Please follow and like us: