ঈদের প্রস্তুতির রেশ সবকিছুর আগে শুরু হয় দর্জি বাড়িতে। একটু আগে আগে পোশাক তৈরির জন্য গেলে দর্জিরা পোশাকটি মনোযোগ দিয়ে বানান। তাড়াহুড়ায় পোশাকে মনমতো নকশায় ত্রুটি হতে পারে। এমন ধারণা থেকে মাপমতো পোশাক বানাতে আগ্রহী নারী-পুরুষ রোজার শুরুর দিকেই দর্জি বাড়ি হাজির হন। তাই বলে শুরুতেই শুধু দর্জিবাড়ি ভিড় এবং পরে ভিড় কমে বিষয়টি তা নয়। কারণ, নিয়মিত গ্রাহকদের ফেরান না দর্জিরা। আর ঈদের সময় রোজগার বেশি হয় বলে গ্রাহকের হাতে পছন্দের পোশাকটি তুলে দিতে কর্মঘণ্টা বাড়ে দর্জি বাড়িতে। উপজেলার তাড়াশ বাজারের দর্জি বাড়ি ঘুরে সেই চিত্রই পাওয়া গেল। তাড়াশ বাজারে ড্রেসকিং টেইলার্সে দেখা হয় তাড়াশ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মির্জা ফারুক ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল বারীক খোন্দকারের সঙ্গে। তারা জানান, ইতিমধ্যে সংগঠনের সদস্যদের জন্য তারা ১২টি পাঞ্জাবী বানাতে দিয়েছেন। নিউ স্টাইল টেইলার্সের মাস্টার (প্রধান দর্জি) মোঃ সাফিন বলেন, ঈদ উপলক্ষে গত বছরের চেয়ে এবছর অর্ডার তুলনামূলক বেশি এছাড়াও রাতে বিপণিবিতান দু’তিন ঘণ্টা বেশি খোলা থাকছে। তাঁরা সাহরীর পর থেকে রাত ১টা পর্যন্ত পোশাক বানানোর কাজ করছেন। তিনি প্রতিটি প্যান্ট ৫শ টাকা, শার্ট ৩শ টাকা, পাঞ্জাবী ৩শ টাকা ও টাউজার ৩শ টাকা মজুরি নিচ্ছেন। বাজারের দর্জিদের দোকান ঘুরে দেখা যায়, কাপড় কাটার লম্বা টেবিলে চলছে চক ও ফিতা দিয়ে মেপে কাপড় কাটা। অনেকে ক্যাটালগ দেখে নকশা বাছাই করেন। এর সঙ্গে আবার বাড়তি লেসজুড়ে পোশাককে আরও আকর্ষণীয় বানান। এক নারীকে দেখা গেল, দরজির দোকান থেকে শুনে নিয়ে ছুটলেন ডিজাইন করার জন্য বাড়তি কাপড় কিনতে। আরেক নারী ঘুরছিলেন মানানসই লেস কিনতে। দর্জি দোকানে কাপড় কাটার বড় টেবিলের পেছনে শোকেসে কাটা কাপড় পুটলি করে বেঁধে থরে থরে রাখা আরেক পাশে সেলাই মেশিন থেকে আসা টানা খট খট যান্ত্রিক সুর ঈদের ব্যস্ততা জানান দিচ্ছিল। লেডিস কর্ণারে মাস্টর মোঃ ইলিয়াস বলেন, প্রতিটি থ্রীপিচ ২শ ৫০টাকা, ব্লাউজ ১শ টাকা, পেটিকোট ৫০শ টাকা ও বোরকা রকমভেদে ৩শ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত মজুরি নিচ্ছেন। তবে জামার গলা, হাত ও পায়জামায় বিভিন্ন নকশা করে দিতে ক্যাটালগ নিয়ে আসেন অনেকে। নকশা বেশি হলে জামা বানাতে সময় লাগে বেশি। তাই মজুরিও বেশি হয়। বাজারের পুরনো দর্জি ড্রেস কিং টেইলার্সের মাস্টার বলরাম বলেন, এবছর কাজের খুব চাপ। ১৫ রোজাতেই অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। তবে অনেকেই পোশাকের মজুরি বাড়ালেও কাস্টমারের কথা মাথায় রেখে আমি মজুরি বাড়াইনি।