
মোঃ জহিরুল ইসলাম রাজু, ফুলগাজী (ফেনী) থেকেঃ- ফেনী জেলার উত্তরাঞ্চলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় বেসরকারীভাবে স্বাস্থ্য সেবার কোন হাসপাতাল না থাকায় শুরু থেকে সাধারন মানুষ সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত । সরকারী যে দুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে এতে চিকিৎসক, নার্স সংকটে চিকিৎসা সেবা অপ্রতুলতার কারনে এ দুটি উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ সঠিক স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এসব দিক বিবেচনা করলে বুঝা যায় ফেনীর উত্তরাঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবার শ্রেষ্ঠ আবদান রাখছে ফুলগাজী স্কয়ার হাসপাতাল। এলাকার মা-বোনদের সিজার ও জটিল অপারেশনে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তা সারিয়ে আনতে সংসারের স্থাবর সম্পদের একাট অংশ সেখান দিয়ে আসতে হয়। যা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের গলার ফাঁস হয় দাড়ায়। সে দিক চিন্তা করে কোন স্বহৃদয়বান ব্যক্তিও এ উত্তরাঞ্চলে সাধারন মানুষের দিক চিন্তাকরে স্বাস্থ্য সেবার জন্য কোন হাসপাতাল নির্মান করেনি।
এ দুটি উপজেলার সাধারন মানুষের স্বাস্থ্য সেবার কথা চিন্তা করে ফুলগাজী উপজেলার ঐতিহাসিক ফুলগাজী বাজারে টি.এস কমপ্লেক্সে অত্র এলাকার কৃতি সন্তান আমেরিকান প্রবাসী এ টি এম ইয়াছিন ছাদেক মজুমদার তাঁর পৈত্রিক জায়গায় এলাকার কিছু স্বহৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগীতায় সাধারন মানুষের কথা চিন্তা করে অত্যাধুনিক ম্যাডিকেলার ইকুপমেন্টস সম্বলিত “ফুলগাজী স্কয়ার হাসপাতাল এন্ড ডিজিটাল ল্যাব” নামে একটি অত্যাধুনিক উন্নতমানের ও কম খরচে সেবা দেয়ার প্রত্যয়ে গত ২০১৫ সালের প্রথম দিকে এ হাসপাতালটি উদ্ভোধন করেছেন।
বর্তমানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক সহ সাধারন স্বাস্থ্য, চক্ষু, ডেন্টালসহ সকল পরিপূর্ন স্বাস্থ্য সেবায় উপযুক্ত একটি আধুনিক হাসপাতালে রুপ নিয়েছে ফুলগাজী স্কয়ার হাসপাতাল এন্ড ডিজিটাল ল্যাব নামে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভিতরে পরীক্ষা নিরীক্ষাগার, চিকিৎসক চেম্বার, রোগী সাধারণদের বিছানা, ডুয়েল অপারেশন থিয়েটার, নিজস্ব এম্বুলেন্স, রোগী সাধারনের অপেক্ষাগার, প্রার্থনা কক্ষসহ সুন্দর ও মনোরম একটি পরিবেশ। এলাকা অনুপাতে রোগীও ভালো সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকছে। এছাড়া হাসপাতালের বর্হিবিভাগে মেডিকেল ক্যাম্প, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হেলথ ক্যাম্প, ব্লাড ক্যাম্পের মাধ্যমে সাধারন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ, সাধারন সেবা ও হেলথ কার্ড প্রদান করেছে। শ্রেণী অনুসারে এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন শেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিনিয়ত তুলনা অনুপাতে বিভিন্ন স্বাস্থ পরীক্ষা/নিরিক্ষা ও সেবা নিয়ে সাধারন রোগীরা সন্তুষ্ট হয়ে যেতে পারছে। তবে মাঝে মধ্যে কিছু অসাধু ব্যক্তিরা রোগী মাধ্যমে মোটা অংকের কমিশন চাওয়া ও বিভিন্ন পরীক্ষা করে টাকা না দেয়ার কারনে বাহিরে গিয়ে সমালোচনা ও কুৎসা রটায়। যা সাধারন রোগীদের সেবার প্রতি যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। আমরা কিন্তুরোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে তাদেরকে মোটা অংকের কমিশন দেইনা বলেই ওরা আমাদের সমালোচনা করে। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইয়াছিন মজুমদার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন “আমি দীর্ঘদিন যাবত দেশের বাইরে ছিলাম, সেখানে দেখেছি কিভাবে প্রান্তিক পর্যায়ে সাধারন মানুষের সেবা দেয়, সে হিসেবে আমার এলাকায় সাধারন জনগনের সেবার দিক চিন্তাকরে আমাদের নিজস্ব স্কয়ার পরিচালকবৃন্দের সহযোগিতায় ফুলগাজী স্কয়ার হাসপাতাল নামে এই প্রতিষ্ঠানটি দিয়েছি।
বিনিয়োগকারীদের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, এটি একটি জনকল্যাণ ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। আমাদের বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীরাই চায় এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গরিব, আসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের সেবা করতে চায় আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।
আমরা প্রতিমাসে ২/৩ ফ্রি খৎনা ক্যাম্প করি, এতে প্রায় ১০-১৫ টা গরিব আসহায় পরিবার আর্থিক সহযোগিতা ও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানে গরিব, আসহায় ও হতদরিদ্র মানুষদের জন্য বিভিন্ন খাতে ৩০% – ৫০% ছাড় দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। অনেক সময় ফ্রি সেবাও দিচ্ছি।
আমরা সরকারের সকল নিয়মনীতি মেনে লাইসেন্স পেয়েছি। এখানে প্রতিটি মেডিকেল ইকুপমেন্টস ইউ এস এ, জার্মান ও জাপান থেকে আমদানি করে এনেছি। শুধু এলাকার সাধারন মানুষকে উন্নত আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য। আমি এ যাবত নিজেও কোন খরচ বা লভ্যাংশ গ্রহণ করিনি। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল প্রতিষ্ঠান থেকে সুবিধা না পেয়ে হাসপাতালের সুনাম নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠছে। বর্তমানে এ হাসপাতালটি ঢাকা শহরের হাসপাতাল উপযোগী করে একটি পূর্নাঙ্গ হাসপাতাল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
Please follow and like us: