ফ্যসিষ্ট আওয়ামীলীগের আমলে যোগদানকারী দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহীর ব্যাপক অনিয়ম, ক্ষমতার দাপট, স্বেচ্ছাচারিতা, অপব্যবহার, ঘুষ দুর্নীতি, অসৌজন্য মুলক আচরণ, সীমাহীন দুর্ব্যবহারের ফলে প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মহাসড়ক অবরোধ করে উপজেলা মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক সমিতি’র শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ। শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতিপক্ষ হয়ে ইউএনও’র পক্ষে ছাত্র বৈষম্য নেতারা প্রতিবাদ জানালে শিক্ষকদের পক্ষে মাঠে অবস্থান নেয় উপজেলা বিএনপি। এসময় ৪ ঘন্টা ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়ক অবরোধের ফলে উপজেলা পরিষদের গেটের দুই ধারে হাজার হাজার গাড়ী আটকে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রিরা।
উপজেলা পরিষদ চত্বর বটতলায় শিক্ষক সমিতির আহবায়ক কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সুজালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম মাষ্টারের আহব্বানে ৪ ডিসেম্বর বুধবার সকালে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে উপজেলার সকল মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারীগণ প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনের কর্মসূচি অংশ গ্রহণ করেন। ইউএনও’র পক্ষে ছাত্র বৈষম্য নাম ব্যাবহার কারীরা প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থান নিলে উপজেলা বিএনপির নেতারা ছাত্র বৈষম্যদের ধাওয়া দিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বর হতে তাড়িয়ে দেয়।
চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বক্তাগণ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফাজলে এলাহী যোগদানের পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, অসহনীয় ঘুষ দুর্নীতি এবং সকল স্কুল প্রধানের সঙ্গে অসৌজন্য মূলক আচরণ তার নিত্য দিনের কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে। সুবিধাবাদী এই অফিসার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের উপর অত্যাচারের সীমা এত বেশি লংঘন করেছেন, তা কল্পনা ও বর্ণনাতিত। ক্ষমতার দম্ভে তিনি সম্মানিত শিক্ষকদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন এবং কথায় কথায় গালমন্দ করে থাকেন, কোন প্রকার কারণ ছাড়াই অহেতুক শিক্ষক কর্মচারীর বিল বেতনে স্বাক্ষর না করে কাল কালক্ষেপণ করেন, দেরিতে বিল প্রদান করেন। যেগুলো কখনোই কাম্য নয়।
বীরগঞ্জের ইতিহাসে ইতোপূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারগন এ ধরনের খারাপ আচরণ ও ঘুষ দুর্নীতি করেন নাই। ফজলে এলাহী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিয়ম বহির্ভূত, একক ক্ষমতা বলে চৌধুরী হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রহমান খান কে অহেতুক বিধিবহির্ভূত সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। কবিরাজ হাট আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিদ্যালয়ে টাকার বিনিময়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করেছেন। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ না দিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা ও একক ক্ষমতা বলে জুনিয়র শিক্ষক কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বানিয়েছেন, যা নীতিমালার পরিপন্থী। বিভিন্ন কারণে বীরগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষাঙ্গনে চলছে চরম অসন্তোষ ও বিশৃঙ্খলা। অতিষ্ঠ সকল শিক্ষক কর্মচারীসহ আ’ম জনতা।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন যুগ্ন আহবায়ক প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব আহসান হাবিব, ফশিউর রহমান চৌধুরী লিটন, মিজানুর রহমান, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল কাদের, মাকসুদা খাতুন, কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন, সহিম উদ্দিন, মজিবুর রহমান, গোবিন্দ রায়, শফিকুল ইসলামসহ অনেকে।
আন্দোলনকারী মানুষ গড়ার কারিগরেরা অনতিবিলম্বে এই দুর্নীতিবাজ নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহি কে প্রত্যাহারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ পুর্বক দীর্ঘ সময় ঢাকা পঞ্চগড় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
অপরদিকে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে জানান, অভিযুক্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী, রাতভর শিক্ষকদের কর্মসূচি বানচাল করতে রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে মোবাইল ফোন, সাধারণ ছাত্রদের দ্বারা ফেসবুকে বিভিন্ন প্রকার স্ট্যাটাসে হুমকি ও মুখোমুখি কর্মসূচি দিয়ে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করেন কিন্তু আন্দোলনকারীরা কৌশলের সংঘাত এড়িয়ে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি যথাযথ পালন করেছেন।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষক কর্মচারী ছাড়াও সুশীল সমাজের সচেতন নাগরিক এবং বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মীরা শত স্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। প্রশাসনের উপর মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের এই যৌক্তিক দাবি দ্রুত কার্যকর করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহীর সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।