
ভারতে এক নারীকে পাচারকালে ২জন অপহরনকারীকে গ্রেফতার করেছে সিপিসি-২, নাটোর ক্যাম্প, র্যাব-৫, রাজশাহী। এ সময় অপহৃত নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টা গোয়েন্দা তথ্য ও বিশেষ প্রযুক্তির ভিত্তিতে সাতক্ষীরা জেলার কলোরোয়া থানাধীন সীমান্তবর্তী সোনাবাড়িয়া এলাকা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় ভারতীয় রুপীসহ স্বর্ণের ১জোড়া বালা, ১টি স্বর্ণের চেইন, ১জোড়া রুপার নুপুর ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
এর আগে ওই নারীকে অপহরণের ঘটনায় রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) নাটোর সদর থানায় গ্রেফতারকৃত অপহরণকারীরা হলো: মোঃ শাহজাহান (৩০), সে যশোর জেলার থানা মনিরামপুর থানার মশি^মনগর এলাকার মোঃ সোবহান আলী সরদারের ছেলে ও একই থানার শ্যামপুর এলাকার মোঃ কাদের সরদারের ছেলে মোঃ কবির হোসেন (৩৮),
মঙ্গলাবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে র্যাব-৫, রাজশাহীর মোল্লা ক্যাম্পের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
র্যাব জানায়, অপহৃত একজন বিবাহিত নারী। গত ৭ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে তার নাটোরের ওয়াসিম আকরামের সাথে বিয়ে হয়। গত ২ মাস পূর্বে ওই নারীর সাথে অপহরণ চক্রের মূলহোতা মোঃ শাহজাহানের সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর থেকেই শাহজাহান তাকে ভাল বেতনে চাকরি-সহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতো। তার প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে ওই নারীকে কৌশলে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করার উদ্দেশ্যে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় বাজার যাওয়ার জন্য বাড়ী থেকে বের হয় ওই নারী। এ সময় অপহরণকারীরা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সিএনজিযোগে তাকে নিয়ে যায়। এ ব্যপারে নারীর স্বামী ওয়াসিম আকরাম বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৪, তারিখ, ১০ সেপ্টেম্বর।
অপহরণের পর থেকেই র্যাব ৫, অপহৃত নারীকে উদ্ধার এবং আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করেন।
এরই ধারবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে, আসামীরা এবং অপহৃত নারী সাতক্ষীরা জেলার কলোরোয়া থানাধীন সীমান্তবর্তী সোনাবাড়িয়া এলাকা অবস্থান করেছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৬, যশোর, র্যাব-৫ ও র্যাব-৬, এর বর্নিত স্থানে একটি যৌথ আভিযান পরিচালনা করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপহৃত নারীকে উদ্ধার-সহ অপহরণ চক্রের মুলহোতা শাহজাহান ও মোঃ কবির হোসেনকে গ্রেফতার করে।
অভিযানটি পরিচালনা করেন, কোম্পানী অধিনায়ক, মেজর, আশিকুর রহমান ও কোম্পানী উপ-অধিনায়ক, সহকারি পুলিশ সুপার, মোঃ নুরল হুদা এবং মেজর মোহাম¥দ সাকিব হোসেন, সিপিসি-৩, যশোর,
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে ছোট থাকা অবস্থায় তার মা তাকে নিয়ে ভারতে চলে যায়। পরবর্তীতে গত ছয় বছর আগে সে আবারো বাংলাদেশে আসে এবং যশোর মনিরামপুরের তার বাবা সোবহান আলীর কাছে থাকে। মূলত সে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের মেয়েদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আকৃষ্ট করে এবং সেই মেয়েদের ভারতে পাচার করে মোটা অংকের টাকা আয় করে থাকে। এই কাজে তাকে তার বোন জামাই মোঃ কবির হোসেন (৩৮) সহ আরো অনেকেই সহযোগীতা করে থাকে বলেও জানা যায়। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা মোঃ শাহজাহানের ভারত এবং বাংলাদেশ দুই দেশেরই নাগরিকতা থাকায় আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে এই ধরণের অপকর্ম সহজ ছিল।
এ ব্যপারে আসামীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নাটোর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।