রাজনীতিতে পাল্টি দিয়ে হঠাৎ বিএনপি বনে যাওয়া যুবলীগ কর্মী দাউদ মৃধার নেতৃত্বে বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে আপন দুই সহোদর জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির দুই সমর্থক। সামনে পাওয়া মাত্র হত্যা করা হবে বলে হুমকিও দিয়েছেন যুবলীগের ওই কর্মী। আবারো হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় থানা কিংবা সেনাবাহিনীর নিকট অভিযোগ দিতেও ভয় পাচ্ছেন অসহায় ওই পরিবারটি। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলা কিংবা প্রতিবাদ করার সাহস নেই কারো। দাউদ মৃধা উপজেলার পশ্চিম জিউধারা এলাকার আঃ রব মৃধার ছেলে। সে জিউধারা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সক্রিয় কর্মী বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত সরকারের আমলে দাউদ মৃধা জয় বাংলার বাজার, ইমরান খার বাজার এবং ঘেনটির বাজারে আওয়ামী লীগের অফিস খুলে পরিচালনা করত। কোন ব্যক্তি মিছিল মিটিংয়ে না গেলে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। প্রচুর অর্থবিত্ত এবং প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। ছাত্র জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর পরই তার বাহিনী নিয়ে এলাকায় ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করে জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চার সৃষ্টি করেছে। বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করে সে এখন বিএনপি’র বড় সমর্থক হয়ে গেছে।
তারা আরো জানায়, ঘটনার দিন দুপুরে দাউদ মৃধা তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে পশ্চিম জিউধারা এলাকার শাহজাহান মল্লিকের ছেলে রফিকুল মল্লিক এবং শফিকুল মল্লিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। বর্তমানে বসত ঘরটিতে ২ শতাধিক ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন রয়েছে। রফিকুল শফিকুল বাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তারা। সেই সাথে দখল করে নিয়ে গেছে তাদের মৎস্য খামার। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় হচ্ছে। এখনো ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছে তাদের বৃদ্ধা মাতা আলেয়া বেগম এবং লাইলী বেগম।
ভীত সন্ত্রস্ত লাইলি বেগম জানান, আমার স্বামী ও ভাসুর দুজনেই বিএনপি’র কট্টর সমর্থক। ৬ আগস্ট দুপুরে এলাকার দাউদ মৃধার নেতৃত্বে শতাধিক ব্যক্তি হাতে দা কুড়াল লোহার রড ইত্যাদি নিয়ে অবৈধভাবে বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। ভয়ে আমাদের প্রাণ যায় যায় অবস্থা। সে সময় আমার স্বামী ও ভাসুর বাড়িতে ছিল না। সে কারণে হয়তো প্রাণে বেঁচে গেছে। ৫ আগস্ট এর আগেও দাউদ মৃধা যুবলীগের কর্মী হিসেবে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে। হাসিনা সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে সেও রাজনীতিতে পাল্টি দিয়েছে। আমরা তো প্রাণভয়ে আছি। তার ভয়ে কোথাও অভিযোগও দিতে পারছি না।
ঘটনার বিষয়ে জানতে মোবাইলে কথা হলে দাউদ মৃধা বলেন, রফিকুল ও শফিকুল আমার একটি প্রজেক্টে আগুন দিয়েছে। জয় বাংলার বাজারের কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেছে। সে কারণে স্থানীয় জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বাড়ি ভাঙচুর করেছে। অবশ্য তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। তারা যদি বিএনপি হয় তবে এখন পালাবে কেন? তিনি আরো বলেন আমি যুবলীগের কর্মী না। তবে ভোট দিতে গিয়েছি। স্থানীয়ভাবে অনেক কিছু ম্যানেজ করে চলতে হয়।
এ বিষয়ে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাবুল জানান, ঘটনার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এখনই জিউধারা বিএনপি নেতাদের কাছে খোঁজ নিচ্ছি। যুবলীগ কিংবা আওয়ামী লীগ থেকে এই মুহূর্তে বিএনপিতে যোগদান করার কোন নির্দেশনা নাই।ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভুক্তভোগীকেও সহায়তা করা হবে।
Please follow and like us: