১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৩রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-




সুঁই-সুতায় সফল ঝিনাইদহের জনপ্রিয় রোমেনা বেগমের স্বাবলম্বি হওয়ার গল্প

Khorshed Alam Chowdhury

আপডেট টাইম : নভেম্বর ১১ ২০১৯, ০০:৪৭ | 876 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহঃ
মাত্র ২০ গজ কাপড় আর একটি সেলাই মেশিন নিয়ে ১৫ বছর পূর্বে কাজ শুরু করেছিলেন রোমেনা বেগম। সুচ-আর সুতাই স্বপ্ন সেলাই করে ঘুরিয়েছেন নিজের সহ অসংখ্য অসহায় নারীর জীবন। আজ তার ঝিনাইদহ শহরে একটি বাড়ি হয়েছে, আছে একটি বিশাল বড় শো’রুম। ঢাকা, খুলনা, বরিশালসহ নানা স্থানে তার হাতের কাজের বিভিন্ন পন্য সরবরাহ হচ্ছে। তার আওতায় কাজ করে কমপক্ষে দুইশত অসহায় নারী সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। আর এটা সম্ভব হয়েছে সমবায় অফিসের পরামর্শ, প্রশিক্ষন ও সহযোগিতার কারনেই। রোমেনা বেগম জানান, তিনি নিজের মতো করে কাজ করে যেতেন। কিন্তু সফলতা আনতে পারছিলেন না। ২০১৪ সালে ঝিনাইদহ জেলা সমবায় অফিসের কর্মকর্তারা তার পাশে দাড়ান।

প্রথমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। এরপর নানা পরামর্শ দেন। তারা রোমেনার তৈরী বিভিন্ন মালামাল মেলার স্টলে প্রদর্শন করেন। এভাবেই তার তৈরী পন্যগুলো অল্পদিনে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। রোমেনা বেগম (৪৬) ঝিনাইদহ শহরের গীতাঞ্জলী সড়কের বাসিন্দা মোঃ ইয়াসিন আলী বিশ^াসের স্ত্রী। ১৯৮৬ সালে তার বিয়ে হয়। এরপর এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে সংসারি হয়ে যান। আর পড়ালেখা করা সম্ভব না হলেও নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেছেন। তার মেয়ে রুবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে দিয়েছেন, পুত্র রিয়াজ আহম্মেদ পড়ালেখা করছে। স্বামীর ঝিনাইদহ শহরে ছোট একটি কস্মেটিক্স এর দোকান রয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের বাসুদেবপুরে। রোমেনা বেগম জানান, বিয়ের পর তাদের সংসার চলছিল না। সেই কারনে ২০০৫ সালে স্বামী-স্ত্রী শহরে চলে আসেন। এখানে স্বামী ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু তেমন পুজি না থাকায় ব্যবসা ভালো চলছিল না। এই অবস্থায় তিনি সিদ্ধান্ত নেন নিজে কিছু একটা করবেন। ছোট বেলা থেকেই হাতের কাজের প্রতি তার ঝোক ছিল। তাই বেছে নেন হাতের কাজ। শুরু করেন নকশী কাঁথা, থ্রীপিচ, কুশন, বেডসিট, বালিশের কভার সহ নানা পন্য তৈরী।

রোমেনা বেগম জানান, ২০০৪ সালে প্রথম যখন এই কাজ শুরু করেন তখন একটি সেলাই মেশিন কেনার পর কাছে পুজি ছিল মাত্র ২০ গজ কাপড় কেনার। এই দিয়ে শুরু করেন কাঁথা সেলাই কাজ। ২বছর পর তার কাছে প্রতিবেশি নারীরা আসতে শুরু করেন। যারা সমাজে অসহায়। অনেক নারী আছেন যাকে স্বামী তালাক দিয়েছেন। আবার অনেকে আছেন স্বামী আরেকটি বিয়ে করে নিয়েছেন। রোমেনা জানান, ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি বাড়িতে বসে অসহায় নারীদের নিয়ে কাজ করেছেন। এরপর ঝিনাইদহ সমবায় অফিসের কর্মকর্তারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি সমবায় থেকে রেজিষ্ট্রেশন নেন। বর্তামানে তার এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ৩৮ জন। রোমেনা সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার এই সংগঠনের মাধ্যমে বর্তমানে কালীগঞ্জে ২০ জন, যশোরে ৫০ জন, খাজুরায় ৩০ জন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক নারী কাজ করছেন। তাদের সমিতির বর্তমান মুলধন ২০ লাখ টাকা। আর সঞ্চয় আমানতের পরিমান প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমবায় কর্মকর্তা সৈয়দ নুরুল কুদ্দুস জানান, শুধু রোমেনা নয় তারা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেককে এভাবে প্রশিক্ষন দিয়ে স্বাবলম্বি করে গড়ে তুলেছেন। সমবায় একটা শক্তি এটা প্রমানে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET