পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে যথাযথ মর্যাদায় ভাষা শহিদদের স্মরণে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে কেন্দ্রিয় শহিদ মিনারের বেদীতে একুশের প্রথম প্রহরে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেদুল হাসান পুস্পস্তবক অর্পণের পর একে একে পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামী লীগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স,আনসার ভিডিপি সহ সকল সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,আওয়ামী লীগ- বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুস্প স্তবক অর্পণ করেন। পুস্প স্তবক অর্পণ শেষে সকল ভাষা শহিদ সহ সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত ও দেশ-জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোঃ মনিরুজ্জামান।
অন্যান্য কর্মসুচির মধ্যে কালো ব্যাচ ধারণ, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ভবনসমুহে অর্ধনমিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সুন্দর বাংলা হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা , সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ সহ ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত/ প্রার্থনা ছিল অন্যতম। দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনিুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেদুল হাসান । অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আলহাজ¦ মোঃ রমজান আলী’র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতির জীবনে এক গৌরবের দিন।
১৯৫২ সালের এইদিনে বাঙালি জাতি বুকের তাজা রক্ত দিয়ে শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মাতৃভাষা রক্ষার জন্য রাজপথে নেমেছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র বাঙালিরাই সেই গৌরবময় জাতি। যারা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল। তাই সারা বিশে^ এই দিনটি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। আরো বক্তব্য রাখেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শায়লা সাঈদ তন্বী,আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুসা মিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার মোস্তাক আহমেদ, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ নজরুল ইসলাম প্রমুখ। এসময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানদ্বয়, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে বিভিন্ন ইভেন্টে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অপরদিকে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করেছেন। এবার উপজেলা প্রশাসন বর্ণমালা দিয়ে শহিদ মিনার সহ শহিদ মিনারের আশপাশ এলাকা নজর কাড়ার মত সাজিয়েছিল বলে মন্তব্য অনেকের।