খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের খুলনা অংশের ৩৩ কিলোমিটার জুড়েই মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনের টানা বর্ষনে মহাসড়কের প্রায় সবটাতেই ছোট বড় গর্ত হয়ে খানা খন্দে রুপ নিয়েছে। মহাসড়কটি যানবাহন চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় সড়ক দূর্ঘটনা অথচ কর্তপক্ষ যেন দেখেও কিছু দেখছে না।
উল্লেখ্য খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কটি আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘোষণা হওয়ার পওে ২০১৭ সালে খুলনা থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু হয়। মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী সংস্থা এই নির্মাণকাজ করে, কাজের মধ্যে সীমাহীন অনিয়ম দূর্নীতি পরিলক্ষিত হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এজন্যে মহাসড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পূর্বেই বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল সহ বিভিন্ন স্থানে সহ কার্পেটিং উঠে যায়। কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে জোড়াতালি দিয়ে নির্মাণ কাজ শেষ করে ঠিকাদারী সংস্থা।
এরপর প্রায় প্রতিদিনই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিভাগের পক্ষ থেকে পাথর, বালি আর বিটুমিন দিয়ে পটি মারার কাজ চলতে থাকে। এর মধ্যেই সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকে একটানা বৃষ্টিপাত শুরু হলে মহাসড়কের প্রায় সবখানেই বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে রীতিমত মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। বিশেষ করে খুলনা সড়ক বিভাগের আওতাধীন খুলনার জিরোপয়েন্ট থেকে শুরু করে আঠারোমাইল গরু হাটা পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা অত্যান্ত করুন হয়ে পড়েছে।
এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি সহ বিভিন্ন রুটের দুরপাঁল্লার বাস এবং একাধিক লোকাল রুটের বাস ছাড়াও ভোমরা স্থল বন্দর, শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও সাতক্ষীরা থেকে বিভিন্ন রুটে পণ্যবাহী ট্রাক ও ভারী ট্যাংকলরী, মাইক্রোবাস, এ্যাম্বলেন্স, প্রাইভেটকার সহ হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। প্রতিটি যানবাহনই বর্তমান সময়ে অনেক বড় ধরণের ঝুঁকি নিয়ে চলছে। অসাবধান বসতঃ রাস্তার গর্তের মধ্যে কোন গাড়ির চাকা পড়লে সেটি আর আস্ত থাকে না।
আর এই ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোটবড় সড়ক দূর্ঘটনা। এতে অনেকের প্রাণ হানির ঘটনা ঘটছে, অনেকে আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছে। ডুমুরিয়া উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের তথ্য মতে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে গত ৯ মাসে মোট ৩৮টি সড়ক দূর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে এসব দূর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৭জন এবং আহত হয়েছে ৩৭জন।
মহাসড়কের এই বেহাল দশার ব্যাপারে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, টানা প্রবল বর্ষণের কারণে মহাসড়কের কার্পেটিং উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার (২অক্টোবর) থেকে আমাদের বিভাগীয় তিনটি ট্রাক দিয়ে ভাঙ্গা স্থানে জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। আর আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে পর্যায়ক্রমে বিটুমিনের কার্পেটিং বাদ দিয়ে আর সি সি ঢালাই দেয়া হবে।
Please follow and like us: