ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র তান্ডবে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ছুপুয়া গ্রামে আলাউদ্দিন নামে এক দুবাই প্রবাসীর বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘরের উপরে পড়েছে একটি বিশাল আকার মেহগনি গাছ। প্রবাসী আলাউদ্দিন ওই গ্রামের নুর আহম্মদ আমিনের ছেলে। গাছ ভাঙ্গার শব্দে তিন সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ঝড়ের প্রবল বাতাসের মধ্যেই ঘর থেকে বের হয়ে আসে আলাউদ্দিনের স্ত্রী শিল্পী বেগম, মূহুত্বের মধ্যেই গাছ পড়ে তাদের বসত ঘরটি মেছাকার হয়ে যায়, ভেঙ্গে টুকরো-টুকরো হয়ে যায় তাদের মা ও সন্তানদের শুয়ে থাকা খাটটি। এসময় গাছের চাপে ঘরের ভিতরে থাকা টিভি, ফ্রিজ, আলমারি, শোকেস, ওয়ারড্রব-সহ সব আসবাবপত্র ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। এতো কিছু হারিয়েও প্রবাসী আলাউদ্দিনের এখন একটাই শান্তনা স্ত্রী-সন্তানদের জীবন রক্ষা পেয়েছে। ঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে পরিবারটি। তবে স্থানীয়রা বলছেন ঝড়ের মধ্যে সাহস করে ঘর থেকে সন্তানদের নিয়ে বের না হলে জীবন চলে যেত প্রবাসী আলাউদ্দিনের স্ত্রী ও তিন সন্তানের। অসহায় প্রবাসী পরিবারটির এমন ক্ষতি হলেও তাদেরকে দেখতে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আসেনি প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
এ ব্যাপারে প্রবাসী আলাউদ্দিনের স্ত্রী বলেন, ঝড়ে আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। আমার স্বামী মাত্র কিছুদিন হয়েছে সব টাকা ঋণ করে বিদেশ গিয়েছে, এখনো ঋণের টাকাও পরিশোধ হয়নি। এখন আমরা কিভাবে চলবো, কোথায় থাকবো একমাত্র আল্লাহই জানে। আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে কেউ একনজর দেখতেও আসেনি। আমাদের ঘরটি পুনঃরায় নিমার্ণ করতে সরকারের সহযোগীতা চাই।
এব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কামাল হোসেন বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুক্ষণ পূর্বে প্রবাসী আলাউদ্দিনের মাধ্যমে জেনেছি, তাদের বাড়িতে যাবো। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করার কথা বলা হেয়েছে কিন্তু কেন তিনি কোন তালিকা করে জমা দেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন এ ব্যাপারে আমাকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কিছু জানায়নি।
রায়কোট উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা থেকে আমাদেরকে তালিকা করতে বলা হয়নি। আমি নিজ উদ্যোগে মেম্বারদেরকে ক্ষতিগ্রস্থদের তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে বলেছি।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রায়হান মেহেবুব বলেন, আমি বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা করে উপজেলা প্রশাসনে জমা দেয়ার জন্য বলেছি। তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর তাদেরকে সহযোগীতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।