
গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেখ মিলাদ হোসেনের অপসারণের দাবি করেছেন ওই পরিষদের ছয়জন সদস্য। তাঁরা নানা অভিযোগ তুলে ১৭ জুন জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকারের উপসচিব ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে অপসারণের দাবিতে লিখিত আবেদন করেছেন।
এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে অবহিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভাদেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শামীম আহমদ কিছু দিন পূর্বে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। নির্বাচিত অধিকাংশ সদস্যবৃন্দ বিগত ০৭/০৪/২০১৫ ইং তারিখ মাসিক সাধারন সভার দিন চেয়ারম্যান বরাবরে একটি লিখিত আবেদন। ঐ দিন মাসিক সাধারন সভায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিষয়ে কোন আলোচনা না হওয়ায় চেয়ারম্যান শামীম আহমদ সাহেব আমাদের লিখিত আবেদন উনার হাতে রেখে দেন। এর পর চেয়ারম্যান সাহেব গত ২১/০৪/২০১৫ ইং তারিখ এপ্রিল/২০২৫ ইং মাসের মাসিক সাধারন সভায় প্যানেল চেয়ারম্যান বিষয়ে সদস্যবৃন্দ কোন প্রকার আলোচনা না করে এবং সদস্যবৃন্দকে না জানিয়ে গোপনে প্রস্তাব গ্রহন করে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ কে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দায়িত্ব দেন। যার স্মারক নং ভাইপ/২০২৫/১৪০ তারিখ: ০৪/০৫/২০২৫ ইং। এবং দায়িত্বভার গ্রহণ পত্রের অনুলিপি ফরোয়াডিং করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর।
তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন, নিয়মতান্ত্রিক ভাবে পূর্বের সাধারন সভায় প্রস্তাব গ্রহন ও পরবর্তী সাধারন সভায় প্রস্তাব অনুমোদনের পর ফরোয়াডিং দেওয়ার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি। তাছাড়া আমাদের ইউনিয়নের নির্বাচিত ১২ জন সদস্যের মধ্যে ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং ৪,৫,৬নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য পদ শূন্য থাকায় বর্তমানে ১০জন নির্বাচিত সদস্য পরিষদে রয়েছেন।
তারা আরোও উল্লেখ করেন, গত ০২/০৬/২০১৫ ইং তারিখ জানতে পান প্যানেল চেয়ারম্যান-২ কে দায়িত্ব দিয়ে চেয়ারম্যান শামীম আহমদ বিদেশ চলে গেছেন। এসময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগের বিষয়ে ০৪/০৬/২০২৫ ইং তারিখে ৬ জন নির্বাচিত ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর সংযুক্ত একটি লিখিত আবেদন জেলা প্রশাসক বরাবরে করেন। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিয়েই বিভিন্ন ধরনের অশালীন আচরন ও ভয়-ভীতির মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদে যে কোন সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, যেহেতু বর্তমান চেয়ারম্যান শামীম আহমদ সাহেব চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদে কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই প্যানেল চেয়ারম্যান-২ কে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছেন, এজন্য অধিকাংশ ইউপি সদস্যরা লিখিত ভাবে অনাস্থা জ্ঞাপন করেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন। যেহেতু চেয়ারম্যান শামীম আহমদ নিয়ম ভহিঃর্ভূত ভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ করে বিদেশ চলে গিয়েছেন এবং এ বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে ব্যাপক অস্থিরতা বিরাজ করিতেছে।
তারা ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম সুচারুরুপে পরিচালনার স্বার্থে নির্বাচিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগের জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক সুবর্ণা সরকার বলেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন চন্দ্র পাল কে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।