খুলনার ডুমুরিয়ায় সেপটি ট্যাংকির ভেতর ভিতর থেকে নাসিমা বেগম (৪২) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে নাসিমার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বল জানিয়েছে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী ইব্রাহিম মোল্যাকে শনিবার সকালে পুলিশ আটক করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ডুমুরিয়া উপজেলার খরসঙ্গ গ্রামের ইব্রাহিম মোল্যা শ্বশুর বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আনার জন্যে তার স্ত্রী নাসিমা বেগমকে প্রায়ই মারপিট করতো। তার জের ধরে ইব্রাহিম গত বৃহস্পতিবার রাতে নাসিমাকে হত্যা করে বাথরুমের সেপটি ট্যাংকির মধ্যে লাশ লুকিয়ে রাখে। শুক্রবার সকালে ইব্রাহিম গরু ছাগল নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর নাসিমাকে বাড়িতে না দেখে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়।
সেই থেকে তারা নাসিমাকে খুঁজতে থাকে, কিন্তু তাকে কোথাও না পেয়ে তারা নাসিমার মেয়েকে খবর দিলে মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসে। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাথরুমের সেপটি ট্যাংকির ভেতর লাশের সন্ধান মেলে। খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
নিহত নাসিমার মেয়ে খাদিজা খাতুন জানান, প্রতিবেশি এক কাকির ফোন পেয়ে আমি বাড়ি এসে আমার আব্বু এবং আম্মুকে না পেয়ে মামার বাড়ি রুদাঘরায় যায়। সেখানে তাদের না পেয় পরে বাড়ি এসে দেখি বাথরুমের পাতকুয়োর (সেপটি ট্যাংকি) ঢাকনা উল্টানো এবং কাদা দিয়ে ছিদ্র আটকানো। এক পর্যায়ে খোয়া উঠাতে দেখি আমার আম্মুর দুটি পা। আব্বু প্রায়ই আম্মুকে মারধর করতো।
নিহত নাসিমার ভাই শহিদুল ইসলাম গোলদার ও শফিকুল ইসলাম গোলদার বলেন, ইব্রাহিম প্রতিনিয়ত আমার বোনকে অত্যাচার করতো, বিভিন্ন সময়ে টাকা চাইতো। আব্বা মারা যাওয়ার পর থেকে ইব্রাহিম আমার বোনের সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য চাপ দিত এবং নিজেই জমির ক্রেতা খুঁজে বেড়াতো।
রঘুনাথপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শাহজাহান আলী বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে রাতেই ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি। অভিযান চালিয়ে ইব্রাহিম মোল্যাকে শনিবার সকালে আটক করা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার স্ত্রীকে হত্যার করার কথা স্বীকার করেছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হত্যার ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি বলে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
