ডুমুরিয়ায় শোভনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত কুমার বৈদ্যের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, মেম্বারদের সাথে বিমাতা সুলভ আচরণ,স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে দীর্ঘ এক মাস চেয়ারম্যান আত্মগোপনে থাকায় নাগরিক সেবা না পেয়ে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগের পর শোভনা ইউপি চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত কুমার বৈদ্য নানা চাপের মুখে আত্মগোপনে চলে যান। তিনি উপজেলা কৃষকলীগ নেতা ও সাবেক ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের অত্যন্ত আস্থাভাজন। দুই দুই বার ইউপি নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন না নিয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন। সেক্ষেত্রে ওই ক্ষমতাধর মন্ত্রী বাবুর ডানহাত তার মাথার উপর ছিল বলে এলাকায় চাউর আছে। ডুমুরিয়া সদরের এক প্রতাপশালী চেয়ারম্যান কে বিভিন্ন কাজে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করায় তিনি লাইম লাইটে চলে আসেন এবং মন্ত্রীর কাছে আরও সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেই থেকে তিনি ক্ষমতার দাপটে সরকারি গাছ কর্তন,নিজ দলীয় লোক ছাড়া ভিজিডি ভিজিএফ কার্ড সহ সকল সরকারী অনুদান, জমি দখল ,ট্রেড লাইসেন্স, স্কুলে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ বানিজ্য সহ নানাবিধ অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়া তার রয়েছে একটি নিজস্ব বাহিনী। স্থানীয় সালিশী বৈঠকে তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। ইউনিয়ন পরিষদের হাতে গোনা দুই একজন সদস্য ছাড়া অধিকাংশ সদস্যই তার কাছে কোনঠাসা। কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি সহ সকল উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের ভাগ বাটোয়ারা তার পকেটস্থ লোক দিয়েই করে আসছেন। আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যান কে পদত্যাগের দাবিতে অধিকাংশ ইউপি সদস্য ও ইউনিয়নবাসির ব্যানারে দফায় দফায় মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
এদিকে দীর্ঘ এক মাস আত্মগোপনে থাকায় ইউনিয়ন পরিষদে না আসায় নাগরিক সনদপত্র,জন্ম মৃত্যু সনদ, ওয়ারেশ কায়েম সনদ সহ বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সাধারণ মানুষ এসে সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। শোভনা পশ্চিমপাড়ার মুছা শেখ, কামরুল ইসলাম সহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন,এক সপ্তাহ ধরে প্রায়ই কাউন্সিলে আসছি চেয়ারম্যান কে না পেয়ে কোন কাজ সমাধান হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর করাতে না পেরে দারুণ ভোগান্তিতে রয়েছি আমরা। অবিলম্বে এ ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, কোন ইউপিতে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকলে সেক্ষেত্রে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করবে। বিভিন্ন জটিলতায় তারাও যদি ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Please follow and like us: