“হামরা গরীব মানুষ, কাম করি খাই। চেয়ারম্যান-মেম্বার হামাক যেইঠেনায় কাজ করিবা কহিবে, হামরা সেইঠেনায় কাজ করিমো। ওমরা হামাক এইঠেনা মাটি ভরাট করিবা কহিচে-এইতানে হামরা এইঠেনায় মাটি ভরাট করেছি”।
দিনাজপুর সদর উপজেলার ৩নং ফাজিলপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কবিরাজপাড়া এলাকায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পের আওতায় (৪০ দিনের কর্মসূচী) নিয়োজিত শ্রমিকরা এমনই কথা জানাচ্ছিলো সাংবাদিকদের কাছে। কার জমির মাটি ভরাট করছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে শ্রমিকরা জানান, এটা মোতাহার ভাইয়ের জমি। মোতাহার হোসেন ৩নং ফাজিলপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। এখানে কে কাজ করতে বলেছেন?-একথা জিজ্ঞাসা করতেই শ্রমিকরা জানালেন চেয়ারম্যান-মেম্বার আর চকিদার এইঠেনা হামাক কাম করিবা কহিচে।
অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পে রাস্তা-ঘাট কিংবা জনসাধারনের দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করার নির্দেশনা থাকলেও এই প্রকল্পে নিয়োজিত শ্রমিকরা মাটি ভরাট করছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত জমিতে। শনিবার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কবিরাজপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ১৫ জন শ্রমিক মাটি ভরাট কাজ করছেন। তারা সকলেই অতিদরিদ্রদের জন্য জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় নিয়োজিত শ্রমিক।
স্থানীয়রা জানান, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে চেয়াম্যান-মেম্বারদের ম্যানেজ করেই সরকারী নিয়োজিত শ্রমিকদের দিয়ে ব্যাক্তিগত জমিতে মাটি ভরাট করে নিচ্ছেন আওয়ামীলীগ নেতা মোতাহার হোসেন। রাস্তার পাশে তার ব্যক্তিগত জমিটি নীচু থাকায় এসব শ্রমিকদের দিয়ে ওই জমিতে মাটি ভরাট করে উুঁচু করে নিচ্ছেন প্রভাবশালী ওই আওয়ামীলীগ নেতা। আর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান একই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় সহজেই এসব শ্রমিকদের দিয়ে ব্যাক্তিগত জমির মাটি ভরাট করে নিতে সুবিধা হয়েছে আ’লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেনের। সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই দলীয় প্রভাবে এই প্রকল্পের শ্রমিকদের দিয়ে করানো ব্যাক্তিগত কাজ।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোতাহার হোসেনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নিউজ করে কি হবে? নিউজ করলে জনপ্রিয়তা বাড়ে।
সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে শ্রমিকদের এভাবে ব্যাক্তিগত কাজ করানো হচ্ছে-এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অভিজিৎ বসাক একই সুরে সাংবাদিকদের বলেন, এগুলো নিউজ করে কি এমন হবে।